হার্ডিঞ্জ ব্রিজ বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘ রেলসেতু। ২৪ হাজার ৪০০ শ্রমিক-কর্মচারীর পাঁচ বছর অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল এই ব্রিজ। পাবনা জেলার পাকশী রেলস্টেশনের দক্ষিণে পদ্মা নদীর ওপর এই সেতু অবস্থিত। তৎকালীন ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জের নাম অনুসারে এই সেতুর নামকরণ করা হয়। হার্ডিঞ্জ ব্রিজের দৈর্ঘ্য প্রায় ১ দশমিক ৮ কিলোমিটার। ব্রিজের ওপর দুটি ব্রডগেজ রেললাইন রয়েছে। ১৯০৮ সালে ব্রিজ নির্মাণের মঞ্জুরি পাওয়ার পর ব্রিটিশ প্রকৌশলী স্যার রবার্ট উইলিয়াম গেইলস হার্ডিঞ্জ ব্রিজ নির্মাণের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। প্রধান প্রকৌশলী রবার্ট শুধু ব্রিজের নকশা প্রণয়ন করেন। ব্রিজের প্রথম প্রকল্প প্রণয়ন করেন স্যার এস এম রেলডলস। এই ব্রিজে রয়েছে ১৫টি মূল স্প্যান। মূল স্প্যান ছাড়াও দুপাশে রয়েছে তিনটি করে অতিরিক্ত ল্যান্ড স্প্যান। ব্রিজ নির্মাণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ছিল রেইথ ওয়ালটি অ্যান্ড ক্রিক। সে সময় পদ্মা ছিল প্রমত্তা ও ভয়াল। ব্রিজ নির্মাণের বড় সমস্যা ছিল নদীর গতি নিয়ন্ত্রণ করে ব্রিজের নিচ দিয়ে স্থায়ীভাবে প্রবাহিত করা। ব্রিজটি নির্মাণের শত বছর পরও বিশ্বের প্রকৌশলীদের কাছে এটি বিস্ময়কর হয়ে আছে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে পাকিস্তানি বাহিনী যখন খুলনা ও যশোরে পরাজয়ের পর পিছু হটে ঈশ্বরদীতে সমবেত হওয়ার উদ্দেশ্যে একটি ট্রেনে এসেছিল, সেই সময় পাকিস্তানি বাহিনীকে কোণঠাসা করার লক্ষ্যে মিত্রবাহিনী বিমান থেকে বোমা নিক্ষেপ করলে ব্রিজের ১২ নম্বর স্প্যানটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। স্বাধীনতার পর ব্রিজটিকে মেরামত করে আগের অবস্থানে ফিরিয়ে আনা হয়।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস