Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

ভৌগলিক পরিচিতি

মৌলিক ভৌগলিক তথ্য

আয়তন

২,৩৭১.০০ বর্গ কিঃমিঃ

নির্বাচনী এলাকা

৫ টি

মোট ভোটার

১৪,৮৪,৭৩২ জন

পুরুষ ভোটার

৭,৩১,৩৩৬ জন

মহিলা ভোটার

৭,৫৩,৩৯৬ জন

উপজেলা

৯ টি

থানা

১১ টি

পৌরসভা

৯ টি

ইউনিয়ন

৭৪ টি

মৌজা

১,৪৮৭ টি

নদী

৮ টি

উন্মুক্ত জলমহল

১৪৩ টি

হাট বাজার

১৬১ টি

মোট জমি

২,৩৬,৫৬৬ হেক্টর

মোট আবাদি জমি

১,৮৫,৭৫০ হেক্টর

ইউনিয়ন ভূমি অফিস

৬১ টি

মোট পাকা রাস্তা

১৫৭৯.০০ কিঃমিঃ

মোট কাঁচা রাস্তা

৩৫২৮.০০ কিঃমিঃ

আবাসন/আশ্রায়ন প্রকল্প

৫ টি

আদর্শ গ্রাম

২৫ টি

পাবনা জেলা ও তার ০৯ টি উপজেলার ভৌগলিক অবস্থান

উপজেলার নাম

আয়তন(বর্গ কিঃমিঃ)

উত্তর অক্ষাংশ

পূর্ব দ্রাঘিমাংশ

আটঘরিয়া

১৮৬.১৫

২৪ ০৩' - ২৪ ১২'

৮৯ ১০' - ৮৯২৫'

বেড়া

২৪৮.৬০

২৩ ৪৮' - ২৪ ০৬'

৮৯৩৫' - ৮৯৪৪'

ভাংগুড়া

১৩৬.০০

২৪০৯' - ২৪ ২১'

৮৯ ২০' - ৮৯২৮'

চাটমোহর

৩০৫.৬৩

২৪ ০৬' - ২৪২১'

৮৯ ১২' - ৮৯ ২৪'

ফরিদপুর

১৩৮.৩৬

২৪ ০৫' - ২৪ ১৪'

৮৯ ২২' - ৮৯৩২'

ঈশ্বরদী

২৪৬.৯০

২৪ ০৩' - ২৪ ১৫'

৮৯ ০০' - ৮৯ ১১'

পাবনা সদর

৪৪৩.৯০

২৩ ৫৩' - ২৪০৫'

৮৯ ০৫' - ৮৯২৫'

সাঁথিয়া

৩৩১.৫৬

২৩ ৫৮' - ২৪০৯'

৮৯ ২৫' - ৮৯ ৩৭'

সুজানগর

৩৩৪.৪০

২৩ ৪৮'- ২৪ ০০'

৮৯ ২৩' - ৮৯ ৩৮'

 

 

এক নজরে সাথিয়া উপজেলা ও ইউনিয়ন সমুহ

এক নজরে সাঁথিয়া উপজেলাঃ

উপজেলার নাম

সাঁথিয়া

আয়তন

৩৩১.৫৬বর্গ কিঃ মিঃ।

জনসংখ্যা

৩,২৩,৯৩২জন।

ঘনতবসতি

৯৮৬ জন।

নির্বাচনীএলাকা

৬৮পাবনা-১।

ইউনিয়ন

১০ টি।

পৌরসভা

০১ টি।

খানা

৬৫,০৩৯টি।

মৌজা

১৭৭ টি।

গ্রাম

২৫৮ টি।

সরকারীহাসপাতাল

০১ টি।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র/ক্লিনিক

১১ টি।

কমিউনিটিক্লিনিক

২৯ টি।

পোষ্টঅফিস

১৯ টি।

নদ নদী

০৩ টি, (ইছামতি, কাগেশ্বরী, বড়াল)।

হাট-বাজার

২৫ টি।

ব্যাংক

১৪ টি।

মহাবিদ্যালয়

১০ টি।

উচ্চবিদ্যালয়

৩৫ টি।

মাদ্রাসা

২৬ টি।

সরকারীপ্রাঃ বিদ্যাঃ

৯০ টি।

রেজিবেসরকারী প্রাঃ বিদ্যাঃ

৭৭ টি।

পটভূমিঃ

 

সাঁথিয়া উপজেলা পাবনা জেলার দ্বিতীয়বৃহত্তম উপজেলা। ৩৩১.৫৬ বর্গ কিঃমিঃ আয়তনের এ উপজেলা পাবনা শহর থেকে ৩৫কিঃমিঃ পূর্বদিকে অবস্থিত। সাঁথিয়া উপজেলা উত্তরে ফরিদপুর ও শাহজাদপুরউপজেলা, পশ্চিমে আটঘরিয়া ও পাবনা সদর উপজেলা, দক্ষিণে সুজানগর উপজেলা এবংপূর্বে বেড়া উপজেলা দ্বারা বেষ্টিত। সাঁথিয়া উপজেলার নামকরণসম্পর্কে বিভিন্ন জনশ্রুতি আছে। জানা যায় সমগ্র সাঁথিয়া অতীতে চরএলাকাছিল। এই চরে সিনথিয়া নামে এক সাঁওতাল আদিবাসি বাস করত। পরবর্তীতে অন্যান্যএলাকা থেকে সাঁওতালরা এসে সিনথিয়ার সংগে বসবাস করতে শুরু করে এবং একটিগ্রামের সৃষ্টি হয়। আদিবাসি সিনথিয়ারনাম থেকেই পরবর্তীতে সাঁথিয়া নামের উৎপত্তি হয় মর্মে শোনা যায়। দ্বিতীয়জনশ্রুতি মতে অনেক আগে সাঁথিয়া অঞ্চল গভীর জংগলে পরিপূর্ণ ছিল। সংগী অথবাসাথী ছাড়া কেহই একা এই এলাকায় চলাফেরা করতনা।

 

সাথিয়া উপজেলার মানচিত্র

 

সকলেই সাথী সহ এখানে আসতেন। পরবর্তীতে এই সাথী থেকেই সাঁথিয়া নামের উদ্ভবমর্মে শোনা যায়। সাঁথিয়া উপজেলার ইতিহাস পর্যালোচনায় জানা যায় বৃটিশ শাসনআমলে লর্ড ওয়ারেন হেষ্টিংসের সময় ১৯১৯ সালে সাঁথিয়া থানার জনম। ১৯৬০ সালেতৎকালীন প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খাঁন এর শাসন আমলে সাঁথিয়া উন্নয়ন সার্কেলহিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। পরবর্তীতে ১৯৮৩ সালে ১৪ সেপ্টেম্বর সাঁথিয়াকেউপজেলায় উন্নীত করা হয়।মূলতকৃষি ভিত্তিক অর্থনীতি এ উপজেলার মূল চালিকা শক্তি। এ উপজেলার চতুরপাশের্ব বড়াল ও যমুনা নদীতে বাঁধ দিয়ে সুরক্ষিত থাকায় কখনও বন্যা হয় না।অপর দিকে শুস্ক মৌসুমে ক্যানেলে পাম্পেরসাহায্যে যমুনা নদী হতে পানি এনে ধরে রেখে এ উপজেলার চাহিদাসহজে পূরণকরা হয়। যার ফলে বন্যা অথবা অনাবৃষ্টি এ এলাকার কৃষিকে খুব বেশী প্রভাবিতকরতে পারে না। স্বাধীনতার পরবর্তী সময় হতে এ উপজেলায় কেন্দ্রীয় সরকারেরপ্রতিনিধি থাকায় এ এখানকার জনগণ রাজনৈতিক ভাবে সচেতন। অর্থনৈতিক ভাবেওসাবলম্বী হতে তারা সচেষ্ট। সে কারণে শুধু কৃষির উপর নির্ভর না করে বিভিন্নপেশা তারা বেছে নিয়েছে। বর্তমানে এ উপজেলার মানুষ কৃষি, হাস মুরগীর খামার, দুগ্ধ খামার, গরু ছাগল পালন. তাঁত শিল্প ইত্যাতি পেশার সাথে জড়িত। এ এলাকারঅর্থনীতিকে স্বাবলম্বি করার জন্য এ সমস্ত সম্ভাবনাময় খাতে জনগণকে অধিকসম্পৃক্ত করে প্রয়োজনীয় সরকারী ও বেসরকারী পৃষ্টপোষকতা দিতে হবে।

 

উপজেলা দর্শনীয় স্থান/স্থাপনা

শহীদনগর স্মৃতিস্তম্ভ

 

পরিচিতিঃবগুড়া নগরবাড়ী মহাসড়কে কাশিনাথপুর থেকে ৪ কিঃ মিঃ উত্তর দিকে শহীদ নগরস্মৃতিস্তম্ভ অবস্থিত। ১৯৭১ সালে ১৯ শে এপ্রিল পাকহানাদারদের আক্রমনে নিরীহজনতা সহ ৩৫ জন বীর মুক্তি যোদ্ধা শহীদ হন। তাদের স্মরণে জায়গাটির নাম শহীদনগর করণ সহ এই স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়। 

 

বেঙ্গল মিট

 

পরিচিতিঃ বগুড়া নগরবাড়ী মহাসড়কের পাশে কাশিনাথপুর হতে ২ কিঃ মিঃ উত্তরে বেঙ্গল মিট অবস্থিত । এটি বাংলাদেশের অন্যতম মাংস প্রক্রিয়াকরণপ্রতিষ্ঠান। এখানে সম্পূর্ণ স্বয়ক্রিয় পদ্ধতিতে মাংসের গুনগত ও হাইজেনিকমান নিয়ন্ত্রণ করে প্রতিদিন প্রায় ২৫০০ কেজি মাংস প্রক্রিয়াজাত করা হয়।প্রক্রিয়াজাতকৃত মাংস বিদেশে রপ্তানী করা হয়। এখানে প্রায় ৫০ জন লোকেরকর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে।

 


 

এক নজরে ঈশ্বরদীউপজেলা ও তার ইউনিয়নসমুহ

ঈশ্বরদী উপজেলার মানচিত্র

এক নজরে ঈশ্বরদী উপজেলাঃ

উপজেলার নাম

ঈশ্বরদী

আয়তন

২৪৬.৯০বর্গ কিলোমিটার

জনসংখ্যা

৩,২২,৪৯৬

ঘনতবসতি

১,৩০৬.১৮বর্গকিলোমিটার

নির্বাচনীএলাকা

৭১, পাবনা-৪

ইউনিয়ন

০৭ টি

পৌরসভা

০1টি

খানা

৬৯,৬১১ টি

মৌজা

১২৮ টি

গ্রাম

২৫৮ টি।

সরকারীহাসপাতাল

০৩টি(বাংলাদেশ রেলওয়ের ০২ টি সহ)

স্বাস্থ্যকেন্দ্র/ক্লিনিক

০৭ টি

কমিউনিটিক্লিনিক

২৯ টি।

পোষ্টঅফিস

১০ টি

নদ নদী

০১ টি(পদ্মা)

হাট-বাজার

২২ টি

ব্যাংক

২০ টি

উপজেলার পটভূমিঃ

 

বর্তমানেউত্তরাঞ্চলের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত ‘‘ঈশ্বরদী উপজেলা ’’পাবনা জেলারমধ্যে একটি দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা। জনসংখ্যার দিক দিয়ে এটি পাবনাজেলার মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম উপজেলা। প্রাপ্ত তথ্য মতে ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৪৯খ্রিঃ তারিখে প্রথমে ‘‘ঈশ্বরদী থানা’’হিসেবে এটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে।পরবর্তীতে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড এবং দায়িত্বাবলী বৃদ্ধি পাওয়ায়১৯৬০ সালে ‘‘উন্নয়ন সার্কেল ’’(আপগ্রেডেড থানা) হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।সর্বশেষ ১৯৮৩ সালে ‘‘ঈশ্বরদী উপজেলা ’’হিসেবে এর নামকরণ করা হয়। ঈশ্বরদীউপজেলাটি পাবনা জেলার পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত। এর উত্তরে নাটোর জেলারবড়াইগ্রাম ও লালপুর উপজেলা, পশ্চিমে কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা উপজেলা, দক্ষিণে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা এবং পূর্বে পাবনা জেলার পাবনা সদর ও আটঘরিয়াউপজেলা। এ উপজেলার দক্ষিণ-পশ্চিম পার্শ্ব দিয়ে প্রবাহিত পদ্মানদী। ২৪°০৩র্ হতে ২৪°১৫র্ উত্তর অক্ষাংশে এবং ৮৯°০র্ হতে ৮৯°১১র্ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে ১২.৯ মিঃ সমুদ্র সমতল থেকে উপরে উপজেলাটির অবস্থান।ঈশ্বরদীউপজেলার নামকরণ নিয়ে নানা মতভেদ রয়েছে। নামকরণ সম্পর্কে তেমন কোননির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে অধিকাংশের মতে ঈশা খাঁর আমলে এ উপজেলারটেংরী গ্রামে ডেহী/কাচারী (Dehi/Kachari) ছিল। এখানে ঈশা খাঁর রাজস্ব কর্মচারীরা বসবাস করতেন এবং রাজস্ব আদায়করতেন। ঈশা খাঁ এখানে অনেকবার গমন করেছেন। সময়ের ব্যবধানে ঈশা খাঁ (Isha Khan) এরIshaএবংDehiএই শব্দ দু’টির সমন্বয়ে পরিবর্তনের মাধ্যমেIshwardi(ঈশ্বরদী) এর নামকরণ হয়। এই নামকরণটি বর্তমানে বেশী পরিচিত।

 

উল্লেখযোগ্য স্থানস্থাপনা

 

বাংলাদেশ ঈক্ষু গবেষনা ইন্সটিটিউটঃ

 

বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইন্সটিটিউটের প্রধান কার্যালয়টি এ উপজেলারপাবনা-ঈশ্বরদী সহাসড়ক সংলগ্ন অরণকোলা ও বহরপুর মৌজার ২৩৫.০০ একর জমিতেঅবস্থিত। বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের স্বল্পবৃষ্টিপাত এলাকার একমাত্র নির্ভরযোগ্য অর্থকরী ফসল ইক্ষু। বিএসআরআই এদেশেরএকটি অগ্রজ গবেষণা প্রতিষ্ঠান। যেখানে গবেষণা হয় ইক্ষুর উপর এবং চিনি, গুড় ওচিবিয়ে খাওয়াসহ ইক্ষুর বহুমুখী ব্যবহারের উপর।১৯৫১সালে তৎকালীন পূর্বপাকিস্তান সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয় পাবনা জেলারঈশ্বরদীতে মাত্র ১৭জন জনবল নিয়ে ‘‘ইক্ষু গবেষণা কেন্দ্র ’’স্থাপন করে।তখন কেন্দ্রটির কার্যক্রম শুধু ইক্ষু প্রজনন এবং জাত বাছাইয়ের মধ্যেসীমাবদ্ধ ছিল। ইক্ষু গবেষণা কেন্দ্রের অধিকতর উন্নয়নকল্পে তদানীন্তনপাকিস্তান সরকারের ‘‘খাদ্য ও কৃষি কাউন্সিল ’’কেন্দ্রটিকে কেন্দ্রীয়সরকারের নিয়ন্ত্রণে ন্যস্ত করে। কিন্তু উল্লেখযোগ্য কোন উন্নতি ছাড়াই ১৯৬৫সালে কেন্দ্রটিকে পুনরায় প্রাদেশিক সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ে ফেরৎ দেয়।১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে এ কেন্দ্রটি প্রায় ধ্বংস হয়ে যায়। দেশ স্বাধীনহওয়ার পর ১৯৭৩ সালে এ কেন্দ্রটিকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন তৎকালীনবাংলাদেশ চিনিকল সংস্থার নিকট হস্তান্তর করা হয়। এ সংস্থাটি ১৯৭৪ সালে ‘‘ইক্ষু গবেষণা ইন্সটিটিউট’’নামে একটি প্রকল্প প্রণয়ন করে।

দ্বিতীয়পঞ্চ বার্ষিক পরিকল্পনাকালে (১৯৮০-৮৫) বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প সংস্থাঈশ্বরদী ও ঠাকুরগাঁও- এ ‘‘স্টাফ ট্রেনিং সেন্টার ’’স্থাপনের লক্ষ্যেপরিকল্পনা কমিশনে একটি প্রকল্প পেশ করে। প্রকল্পটি বিবেচনাকালে ‘‘স্টাফট্রেনিং সেন্টার’’টি ইক্ষু গবেষণা ইন্সটিটিউটের সাথে যুক্ত করে অনুমোদনদেয়া হয় এবং ইক্ষু গবেষণা ইন্সটিটিউটের নাম পরিবর্তন করে ‘‘ইক্ষু গবেষণা ওপ্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট ’’করা হয়। সরকার ১৯৮৯ সালে একটি কেবিনেটসিদ্ধান্তের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটিকে জাতীয় প্রতিষ্ঠানে উন্নীত করার লক্ষ্যেপুনরায় কৃষি মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করে। ১৯৯৬ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশসরকারের মহামান্য রাষ্ট্রপতি নির্বাহী আদেশ বলে ইক্ষু গবেষণা ও প্রশিক্ষণইন্সটিটিউট কে বিলুপ্ত করে ‘‘বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইন্সটিটিউট’’স্থাপনকরেন। অতঃপর ১৯৯৬ সালের ১৭ আগস্ট জাতীয় সংসদে বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণাইন্সটিটিউট আইন প্রণীত হয়।

 

বিএসআরআইদেশের চিনি ও গুড় উৎপাদনে স্বয়ং-সম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করছে।মূলত এ ইন্সটিটিউট হতে দু’ধরনের কাজ সম্পাদিত হয় (ক) ইক্ষুর উন্নত জাত ওউন্নত উৎপাদন কলা কৌশল উদ্ভাবন এবং (খ) উদ্ভাবিত উন্নত জাত ও উন্নত উৎপাদনকলা-কৌশলসমূহ ইক্ষু চাষীদের মধ্যে বিস্তার ঘটানো। ৮টি গবেষণা কেন্দ্র, ১টিসংগনিরোধ কেন্দ্র এবং ২টি আঞ্চলিক কেন্দ্রের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে এর গবেষণাউইং। অন্যদিকে প্রযুক্তি হস্তান্তর উইং গঠিত হয়েছে ২টি প্রধান বিভাগ, ৬টিউপকেন্দ্র এবং ৩টি শাখার সমন্বয়ে। প্রযুক্তি হস্তান্তর উইং সাধারণতঃইক্ষুচাষী ও সম্প্রসারণ কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়। চাষীর জমিতে নতুনপ্রযুক্তিসমূহের প্রদর্শনী স্থাপন করে। বিভিন্ন ধরণের প্রকাশনার মাধ্যমেচাষাবাদের নতুন খবরের বিস্তার ঘটায়। চাষীর জমিতে নতুন প্রযুক্তির উপযোগিতাযাচাই করে এবং এর ফিড-ব্যাক তথ্য সংগ্রহ করে।

বিএসআরআইএ পর্যন্ত ৩৪টি ইক্ষুজাত উদ্ভাবন ও অবমুক্ত করেছে। এর সবগুলোই উচ্চ ফলনশীলও অধিক চিনি সমৃদ্ধ। এসব জাতগুলো দেশের চিনিকল এলাকার প্রায় ৯৯% এবংচিনিকল বহির্ভূত গুড় এলাকায় প্রায় ৫৭% এলাকা জুড়ে চাষাবাদ হচ্ছে।

 

আঞ্চলিক কৃষি ও ডাল গবেষনা কেন্দ্রঃ

 

পাবনা-ঈশ্বরদী মহাসড়কের পাশে আলহাজ্ব মোড়ের উত্তরে এ কেন্দ্র ২টি অবস্থিত।আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র (আরএআরএস) ১৯৪৬ সালে উন্নত বীজ ও চারাউৎপাদনের লক্ষ্যে ‘‘নিউক্লিয়াস সীড মাল্টিপ্লিকেশন ফার্ম’’নামেপ্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬৫ সালে এটি হর্টিকালচারাল শষ্যের গবেষণার উদ্দেশ্যে ‘‘হর্টিকালচারাল রিসার্চ সাব-স্টেশন ’’নামে রূপান্তরিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৬৯সালে ‘‘এগ্রিকালচারাল রিসার্চ সাব-স্টেশন ’’নামে উন্নীত হয়। কিন্তু ১৯৭১সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এ প্রতিষ্ঠানটি দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ১৯৭৬সালে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধিন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা স্বায়ত্বশাসন লাভ করেএবং তখন এই প্রতিষ্ঠানটি উন্নীত হয়ে আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র হিসেবেপরিচিতি লাভ করে। বর্তমানে এ কেন্দ্রটির আওতায় ৪টি ‘‘ফার্মিং সিস্টেমরিসার্চ সাইট’’(এফএসআর)সহ ৭টি উপ-কেন্দ্র এবং অন-ফার্ম রিসার্চ ডিভিশন(ওএফআরডি) এর ২৩টি ‘‘মাল্টি লোকেশন টেস্টিং সাইট’’(এমএলটি) রয়েছে।রাজশাহী বিভাগের ১৬টি জেলা এ কেন্দ্রটির আওতায় রয়েছে।

আঞ্চলিককৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট এর ক্যাম্পাসে ডাল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান দপ্তর(হেড কোয়ার্টার) অবস্থিত।১৯৯০-৯৫ সালের সিডিসি ফেজ-১ এর আওতায় ১৯৯৪ সালে এইকেন্দ্রে কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে এ কেন্দ্রটি ডালশষ্যের ক্রমবর্ধমানচাহিদার প্রেক্ষিতে এ দেশের বিভিন্ন ডালশষ্যের উন্নত ও বেশী উৎপাদনশীল জাতউন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। ডাল গবেষণা কেন্দ্রটি এ পর্যন্ত ডালের২৪টি জাত উদ্ভাবন করেছে যা কৃষক পর্যায়ে অত্যন্ত জনপ্রিয়তা লাভকরেছে।আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের ক্যাম্পাসে ডাল গবেষণা কেন্দ্র ছাড়াওকৃষি প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট (এটিআই), বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব নিউক্লিয়ারএগ্রিকালচার (বিআইএনএ), বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি (এসসিএ) এবং কৃষি সম্প্রসারণবিভাগের হর্টিকালচার বেস রয়েছে। এ কেন্দ্রটির নিজস্ব ৫৭.৮৩ হেক্টর জমিসহক্যাম্পাসে মোট ৮১.২৭ হেক্টর জমি রয়েছে। জাতীয় কৃষি উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণঅবদান রাখার জন্য এ কেন্দ্রটি ১৯৮১ সালে ‘‘প্রেসিডেন্ট স্বর্ণ পদক ’’লাভকরেছে।

 

পাবনা সুগার মিলস লিঃ

 

পাবনা জেলাধীন ঈশ্বরদী উপজেলার দাশুড়িয়া ইউনিয়নের অন্তর্ভূক্ত পাকুড়িয়ামৌজায় ঈশ্বরদী পাবনা মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে পাবনা সুগার মিলস্ লিঃ ও এরসংশ্লিষ্ট স্থাপনাসমূহ অবস্থিত। পাকিস্তান সরকারের ৪৮০০.২৭ লক্ষ টাকা ঋণসহযোগিতাসহ স্থানীয় মুদ্রায় ৩১২২.৫৫ লক্ষ টাকা এই মোট ৭৯২২.৮২ লক্ষ টাকাব্যয়ে দৈনিক ১৫০০.০০ মেঃটন আখ মাড়াই ও বাৎসরিক ১৫,০০০.০০ মেঃ টন চিনিউৎপাদনের লক্ষ্যে ১৯৯২ সালে বিএসএফআইসি এর ব্যবস্থাপনায় এ মিলটি স্থাপনেরকাজ আরম্ভ হয়। ১৯৯৭ সালে প্রকল্পের সমাপ্তি হয়। ১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে মিলটিরপরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয় এবং ১৯৯৭-৯৮ মৌসুমে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উৎপাদনশুরু হয়। এইচএমসি লিঃ তক্ষশীলা, পাকিস্তান মিলটির মূখ্য যন্ত্রপাতিসরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান।

এ মিলটির অনুমোদিত মোট মূলধনের পরিমাণ ৫,০০০.০০ লক্ষ টাকা। মিলের মোট জমির পরিমাণ ৬০.০০ একর।

এর মধ্যে কারখানা ২৭.০০ একর, আবাসিক ও অন্যান্য ১৮.০০ একর এবং রাস্তা ও লেগুন ১৫.০০ একর।চিনিও চিটাগুর উৎপাদন ছাড়াও এ মিল হতে ইক্ষু চাষীদের ইক্ষু চাষে উদ্বুদ্ধ করারজন্য সহায়ক ঋণ প্রদান করা হয়ে থাকে। মূলতঃ ১৯৯৭-৯৮ মৌসুম হতে ঋণ প্রদানশুরু হয়। ২০০৮-০৯ মৌসুমে এ পর্যন্ত ২৫০.৭২ লক্ষ টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছেএবং ২৪৮.৩৩ লক্ষ টাকা ঋণ আদায় করা হয়েছে। ঋণ আদায়ের হার ৯৯%। ২০০৬ সাল হতেআখ চাষীদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ২০০৬ সালে ২৪০ জন, ২০০৭ সালে২৪০ জন এবং ২০০৮ সালে ২৬০ জন আখ চাষীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।

মিলটিরপ্রতিষ্ঠালগ্নে যে পরিমাণ চিনি উৎপাদনের টার্গেট নিয়ে এর যাত্রা শুরু হয়, পরবর্তীতে কখনোই সে পরিমাণ সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হয়নি। মূলতঃ চিনিউৎপাদনের কাঁচামাল (ইক্ষু) এর উৎপাদন কম হওয়ায় মিলটি কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রাঅর্জনে সক্ষম হচ্ছেনা। প্রতি বছর আখ মাড়াই মৌসুম শুরু হওয়ার পর মিল চালু হয়এবং চালুর পর নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই মিলটি বন্ধ করতে হচ্ছে। ২০০৮-০৯মৌসুমে ২৮/১১/২০০৮ খ্রিঃ তারিখে মিলটি চালু হয়, কিন্তু আখের অভাবে২২/০১/২০০৯ খ্রিঃ তারিখে মিলটি বন্ধ করতে হয়েছে। এ মৌসুমে মোট ৫৬ মাড়াইদিবসে ৬৯,৮৩৯ মেঃটন আখ মাড়াই করা হয়েছে এবং ৪,২৯৮ মেঃটন চিনি এবং ৩,০২৫.২৩মেঃটন চিটাগুড় উৎপাদিত হয়েছে। দেখা যাচ্ছে দৈনিক গড় মাড়াইকৃত আখের পরিমাণ১২৫৮.৮৩ মেঃটন। শুরু থেকেই মিলটি লোকসানে ছিল। ২০০৮-০৯ অর্থ বছরে এ মিলটিরপুঞ্জিভূত লোকসানের পরিমাণ ৭৭২৫.০৯ লক্ষ টাকা। আখ উৎপাদন বৃদ্ধি করে এমিলটিকে লাভজনক পর্যায়ে আনা সম্ভব বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।

 

নর্থ বেঙ্গল পেপার মিলস লিঃ

 

বার্ষিক ১৫,০০০ মেঃটন মিক্সড জিএসএম এর ভিত্তিতে রাইটিং, প্রিন্টিং, ব্রাউনিং, র‌্যাপার, ব্লু ম্যাচ ইত্যাদি গ্রেডের কাগজ উৎপাদনের জন্য ১৯৭০সালে পাবনা জেলার পাকশীতে পদ্মানদীর তীরে হার্ডিঞ্জ ব্রীজের নিকটবর্তীস্থানে জার্মান কনসোর্টিয়ামের আর্থিক সহায়তায় তৎকালীন ইপিআরডিসি নর্থবেঙ্গল পেপার মিলস্ স্থাপন করেন। ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের দিয়ারবাঘইল মৌজায় মিলটি অবস্থিত। মিলটির জমির পরিমাণ ১৩৩.৫৪ একর। কারখানাটিস্থাপনের শেষ পর্যায়ে দেশে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে ইরেকশনে নিয়োজিতবিদেশী ইরেকটরগণ কারখানাটি কমিশনিং না করেই দেশ ছেড়ে চলে যান। স্বাধীনতাযুদ্ধকালীন সময়ে কারখানাটির ব্যাপক ক্ষতি হয়। পরবর্তীতে দেশ স্বাধীন হওয়ারপর স্থানীয় প্রকৌশলী/প্রযুক্তিবিদগণের প্রচেষ্টায় কারখানাটি চালু করা হয়এবং ১৯৭৪ সালে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উৎপাদন শুরু হয়। বিদেশী বিশেষজ্ঞ কর্তৃককারখানাটির গ্যারান্টি টেস্ট না হওয়ায় ডিজাইনে ত্রুটি-বিচ্যুতি এবং বিভিন্নইউনিটের মধ্যে অসমতা থেকে যায়। এই কারখানাটিতে মন্ড উৎপাদনে অাঁশযুক্তকাঁচামাল হিসেবে ব্যাপাস (আখের ছোবড়া) ব্যবহৃত হত। পর্যায়ক্রমে দীর্ঘদিনচলাচলে বিবিধ ত্রুটি পরিলক্ষিত হওয়ায় বিগত ১৯৮৮-৮৯ সনে কারখানাটি বিএমআরইকরা হয়। যথারীতি উৎপাদন কার্যক্রম বিএমআরই এর পর শুরু হয়। প্রতিদিন কাগজউৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৬০ মেঃটন। কাঁচামাল হিসেবে পুরাতন ও ব্যবহৃত কাগজব্যবহার করা হত। ইতোমধ্যে বিগত ১৯৯৫-৯৬ অর্থ বছর থেকে উক্ত কাঁচামালেরঅস্বাভাবিক স্বল্পতা দেখা যায়। যার প্রেক্ষিতে ১৯৯৪-৯৫ অর্থ বছরে সবুজ পাটহতে মন্ড উৎপাদনের জন্য স্থাপিত গ্রীণ জুট প্রকল্পটি পরিত্যাক্ত হওয়ায়ওয়েস্ট পেপার থেকে মন্ড উৎপাদনের জন্য ব্যবহারের মাধ্যমে মন্ডের ঘাটতিকিছুটা মেটানো হয় এবং কাগজ উৎপাদনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা হয়। কিন্তু এসববিবিধ কারণে কারখানাটি কোন সময়ই পূর্ণ উৎপাদন ক্ষমতায় চালানো সম্ভব হয়নি।ফলে মিলটি চালুর পর থেকে অব্যাহতভাবে লোকসান দিয়েছে।

কাগজউৎপাদনে মোট ব্যয়ের ২৫% এনার্জি খাতে ব্যয় হয়। তম্মধ্যে জ্বালানী খাতে ১৫%ও বিদ্যুৎ খাতে ১০% ব্যয় হয়। বিদ্যুৎ চাহিদা পিডিবি বিদ্যুৎ থেকে এবংজ্বালানী চাহিদা ফার্নেস ওয়েল ব্যবহার করে মেটানো হত।পেট্রো বাংলা কর্তৃকবিগত ২০০০-২০০১ সনে গ্যাস সরবরাহ নেটওয়ার্ক অত্র কারাখানা পর্যন্তসম্প্রসারিত হওয়ায় ভবিষ্যতে গ্যাস ব্যবহারের মাধ্যমে উল্লিখিত খাতসমূহেরব্যয় হ্রাস করা সম্ভব হতে পারে। উৎপাদন ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে প্রাকৃতিকগ্যাস লাইন কারখানার প্রধান গেট পর্যন্ত এলেও বাস্তবে সংযোজন না দিয়েইসরকার কর্তৃক বিগত ৩০/১১/২০০২ তারিখ ৯২৬ জন জনবলকে পে-অফ (চাকুরীচ্যূত)করতঃ কারখানাটি বন্ধ করা হয়।

১৯৮৯সনের সমাপ্ত বিএমআরই প্রকল্পের পর কারখানাটিতে যথারীতি উৎপাদন কার্যক্রমঅব্যাহত রাখা হয়। সরকারী সিদ্ধান্ত মতে গত ৩০/১১/২০০২ তারিখ সমূদয় জনবল(শ্রমিক ৫৮২ জন, কর্মচারী ২৬৭ জন, কর্মকর্তা কেন্দ্রীয় ক্যাডারভূক্ত ৫২ জন, কর্মকর্তা কারখানা পর্যায়ে ২৫জন ) সর্বমোট ৯২৬ জন কে পে-অফ করতঃ কারখানাবন্ধ করা হয়। পে-অফ এর কারণে বন্ধের পর বিসিআইসি জয়েন্ট ভেঞ্চারের মাধ্যমেচালানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং নিম্নোক্ত তারিখ সমূহে ইওআই আহবান করেঃ১মইওআই আহবান করা হয় ১০/০৪/২০০৫ খ্রিঃ তারিখ। উক্ত আহবানকৃত ইওআইতেশুধুমাত্র একটি প্রতিষ্ঠান মেসার্স স্পেক্ট্রা জেনেটিস, দরপত্র দাখিল করেন।যা মন্ত্রণালয়ের পত্র সূত্র নং- শিম/স্বস(বিসিআইসি)পার-২২/২০০৫/৪১৩ তারিখ১৫/৬/০৬ খ্রিঃ বাতিল বলে গণ্য হয়।২য়ইওআই আহবান করা হয় গত ১৭/৮/০৬ খ্রিঃ তারিখ। উক্ত দরপত্রে ৬(ছয়)টিপ্রতিষ্ঠান যথাক্রমে মেসার্স মেঘনা গ্রুপ, হোসেন পাল্প এন্ড পেপার মিল, মাস্ক গ্রুপ, জাপান বাংলাদেশ গ্রুপ, নিটোল পাল্প এন্ড পেপার, রানাএক্সপোর্ট লিঃ দরপত্র সংগ্রহ করে শুধুমাত্র একটি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মাক্সগ্রুপ দরদাতা দরপত্র দাখিল করেন। যা পরবর্তীতে পত্র নং-শিম/স্বস/বিসিআইসি/পার-২৭/২০০৬/৬৩৪ তারিখ ৫/১১/২০০৬ মাধ্যমে বাতিল পূর্বকপূনঃ দরপত্র আহবানের জন্য নির্দেশ হয়।৩য়বার ইওআই আহবান করা হয় ০১/২/২০০৭ তারিখ। এ সময় ২টি দরদাতা যথাক্রমেমেসার্স হামিম গ্রুপ, মাক্স গ্রুপ দরপত্র/ইওআই দাখিল করেন। পরবর্তীতেমন্ত্রণালয়ের পত্র নং প্রমকা/প্রাঃকঃ/উপ-পরি -১/০৭/৫৪ তারিখ ০৪/১০/০৭ খ্রিঃএর সিদ্ধান্ত মতে মিলটি জয়েন্ট ভেঞ্চারের পরিবর্তে বে-সরকারীকরণ খাতেচালানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পে-অফ এর পর জয়েন্ট ভেঞ্চার/বে-সরকারীভাবেচালানোর জন্য প্রচেষ্টা চালানো হলেও অদ্যাবধি চালু করা সম্ভব হয়নি।

উল্লেখ্যযে, যৌথ উদ্যোগে বিগত ২০০৩ সনে বিসিআইসি’র গঠিত কমিটির সুপারিশ ২৩/১২/২০০৩খ্রিঃ তারিখ পূনঃ চালানোর জন্য মেশিনারী ও ইকুইপমেন্ট ক্রয় এবং চলতি মুলধনবাবদ ব্যয়ের জন্য ১৬.০০ কোটি টাকা সরকারী ঋণ প্রদানের প্রস্তাব করাহয়েছিল, যার সূত্র নং বিএন্ডসি/কর্ড/৬০০.১৪/২১৬ তারিখ ০৭/১২/০৩ খ্রিঃ। যাপরবর্তীতে ০৮/০৪/২০০৪ খ্রিঃ মোতাবেক খরচের পরিমাণ আনুমানিক নির্ধারণ করাহয়েছিল ৩০.০০ কোটি টাকা। কোন প্রস্তাবনাই আজ পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয়নি।

যেহেতুদীর্ঘ ৬ বছরের অধিক সময় কারখানাটি বন্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে সেহেতুস্বাভাবিক ক্ষয়ক্ষতিজনিত কারণে ধীরে ধীরে এর কার্যকারিতাও হ্রাস পেয়েছে। এরফলে মিলটি পু্নঃ চালুর ক্ষেত্রে মেশিনারী ও ইকুইপমেন্ট ক্রয়, রক্ষণাবেক্ষণব্যয়সহ চলতি মুলধনের পরিমাণ স্বাভাবিকভাবেই বৃদ্ধি পাবে।

২০০৭সনে জয়েন্ট ভেঞ্চারের পরিবর্তে মিলটি বিরাষ্ট্রীয়করণের জন্য উদ্যোগ গ্রহণকরলে প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়। প্রাইভেটাইজেশন কমিশনেরনিয়ন্ত্রণে ২০০৮ সনের শেষার্ধ হতে অদ্যাবধি ২ বার দরপত্র প্রাইভেটাইজেশনকমিশন হতে আহবান করা হয়।

 

সর্বশেষআহবানকৃত দরপত্রের কার্যকারিতা এখন পর্যন্ত প্রাইভেটাইজেশন কমিশনেরনিয়ন্ত্রণাধীন রয়েছে। ফাইনাল কি সিদ্ধান্ত হয়েছে সে ব্যাপারে অদ্যাবধি জানাযায়নি। তবে সম্প্রতি নতুন সরকার দেশ পরিচালনার ভার গ্রহণ করায় বন্ধকারখানাগুলি পুনঃ চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করায় কারখানাটি পুনঃ চালুর লক্ষ্যেবিসিআইসি কর্তৃক একটি উচ্চ পর্যায়ের টীম গত মার্চ, ২০০৯ মাসের শেষার্ধে গঠনকরা হয়েছে। বিসিআইসি কর্তৃক গঠিত উচ্চ পর্যায়ের টীম গত ২১/৩/০৯ ও ২২/০৩/০৯খ্রিঃ তারিখ এ কারখানা সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করেন। উক্ত টীম কর্তৃককারখানাটি চালুর বিষয়ে রিপোর্ট বাস্তবায়নের বিষয়ে সংস্থার প্রধান কার্যালয়েঅদ্যাবধিও কাজ চলছে। পে-অফ জনিত কারণে বন্ধ কারখানাটি পুনরায় চালু করারপ্রক্রিয়াধীন আছে।

 

ঈশ্বরদী ইপিজেডঃ

 

রপ্তানীপ্রক্রিয়াকরণ এলাকা সংক্ষেপে ইপিজেড ঈশ্বরদী উপজেলা সদর হতে প্রায় ৬ কিঃমিঃ দক্ষিণে অবস্থিত। বেপজা’র উচ্চ পর্যায়ের কমিটি কর্তৃক এলাকাটি ইপিজেডপ্রকল্প হিসেবে অনুমোদন প্রাপ্ত হয়। সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য এরূপএকটি প্রকল্প উত্তরবঙ্গে এই প্রথম। প্রকল্পভূক্ত এলাকার জমির পরিমাণ ১২৮.৪৬একর, প্রশাসনিক এলাকা ১৮.৮৫ একর, আবাসিক এলাকা ৩৬.৯৫ একর। এছাড়াও ভবিষ্যতেসম্প্রসারণের কার্যক্রমভূক্ত এলাকা ১২৪.৭১ একর। এপ্রিল, ২০০৫ মাসে এজোনটির কার্যক্রম শুরু হয়। ১ম ফেজে প্লট সংখ্যা ১৫৮টি, প্রত্যেক প্লটেরপরিমাণ ২০০০ বর্গ কিঃমিঃ। ১৩১টি প্লট বিভিন্ন ইনভেস্টরকে বরাদ্দ দেয়াহয়েছে। ২টি প্লট ইনভেস্টরদেরকে বরাদ্দ দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। ৬টি প্লটসংরক্ষিত রয়েছে এবং ১৯টি প্লট খালি রয়েছে।

বর্তমানে৫টি শিল্প কারখানা চালু রয়েছে এবং ৬টি কারখানা নির্মাণাধীন এবংবাস্তবায়নাধীন আছে। ২০০৯ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত ১৪,৫৪৬ মিলিয়ন ইউএস ডলার এজোনে ইনভেস্টমেন্ট করা হয়েছে। ৭.৩ মিলিয়ন ইউএস ডলার পরিমাণ উৎপাদিত দ্রব্যরপ্তানী করা হয়েছে। স্থানীয় ১১০৭ জন কর্মচারী এ জোনে নিয়োগ করা হয়েছে।

এইপিজেড- টিতে কাস্টমস্ অফিস, নিরাপত্তা অফিস, জোন সার্ভিসেস কমপ্লেক্স, মেডিকেল সেন্টার, ফায়ার স্টেশন, পুলিশ ক্যাম্প, নিরাপত্তা ব্যারাক, রেস্টহাউস, নিজস্ব টেলিফোন এক্সচেঞ্জ, গ্যাস বিতরণ অফিস এবং ব্যাংকিং সুবিধারয়েছে। বর্তমানে দেশীয় এন্টারপ্রা্ইজ ছাড়াও অস্ট্রেলিয়া, চীন, হংকং, তুর্কিস্তান এবং ভারতের এন্টারপ্রাইজ রয়েছে। বর্তমানে বিদ্যমান মিল কারখানাহতে উৎপাদিত দ্রব্যগুলো হল তামার তার, এংলো এবং ফ্লাট টিউব, সোয়েটার, পলিথিন দ্রব্য, গার্মেন্টস পোষাক, পলিস্টার, প্লাস্টিক দ্রব্য, মোজা, ব্যাটারী, বিদ্যুৎ, তুলা, ফ্যাব্রিক্স প্রভৃতি।বিদেশী উদ্যোক্তাগণ জোনটিপরিদর্শন করে বিনিয়োগে বেশ আগ্রহী হচ্ছেন। বর্তমানে ঈশ্বরদী বিমান বন্দরটিবন্ধ রয়েছে। বিমান বন্দরটি চালু হলে বিদেশী উদ্যোক্তাদের সংখ্যা আরো বৃদ্ধিপাবে এবং এ এলাকাটি এদেশের বেশ লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে বলেঈশ্বরদীবাসী মনে করেন।

 

হার্ডিঞ্জ ব্রীজ:

 

হার্ডিঞ্জ ব্রীজ ঈশ্বরদী উপজেলার একটি ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা। ঈশ্বরদী উপজেলাসদর হতে প্রায় ৮ কিঃ মিঃ দক্ষিণে পাকশী ইউনিয়নেপদ্মা নদীর উপর ব্রীজটিঅবস্থিত। ১৮৮৯ সালে তৎকালীন অবিভক্ত ভারত সরকার আসাম, ত্রিপুরা, নাগাল্যান্ড ও উত্তরবঙ্গের সাথে কলকাতার যোগাযোগ সহজতর করার লক্ষ্যেপদ্মানদীর উপর ব্রীজ নির্মাণের প্রস্তাব করেন। পরবর্তীতে ১৯০৮ সালে ব্রীজনির্মাণের মঞ্জুরী লাভের পর বৃটিশ প্রকৌশলী স্যার রবার্ট গেইল্স সেতুনির্মাণের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।১৯০৯সালে ব্রীজ নির্মাণের সার্ভে শুরু হয়। ১৯১০-১১ সালে পদ্মার দুই তীরে ব্রীজরক্ষার বাঁধ নির্মাণ হয়। ১৯১২ সালে ব্রীজটির গাইড ব্যাংক নির্মাণের কাজশুরু হয়। পাশাপাশি ব্রীজটির গার্ডার নির্মাণের কাজ শুরু হয়। অতঃপর ব্রীজটিরগার্ডার নির্মাণের জন্য কূপ খনন করা হয়। ২৪ হাজার শ্রমিক দীর্ঘ ৫ বছরঅক্লান্ত পরিশ্রম করে ১৯১৫ সালে ব্রীজটির নির্মাণ কাজ শেষ করেন। তৎকালীনভাইসরয় ছিলেন লর্ড হার্ডিঞ্জ। তাঁর নামানুসারে ব্রীজটির নামকরণ করা হয়হার্ডিঞ্জ ব্রীজ। সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ৩ কোটি ৫১ লক্ষ ৩২ হাজার ১ শত ৬৪টাকা। ব্রীজটির দৈর্ঘ্য ৫ হাজার ৮ শত ফুট। ব্রীজটিতে ১৫টি স্প্যান আছে।ব্রীজটি ঈশ্বরদী ভেড়ামারা সীমানায় পদ্মানদীর উপর অবস্থিত। ব্রীজটি দিয়েশুধু ট্রেন চলাচল করে। বাংলাদেশ রেলওয়ে ব্রীজটির রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তারদায়িত্বে রয়েছে।

 

লালন শাহ সেতুঃ

 

নদীমাতৃকবাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের দ্বিতীয় বৃহৎ সড়ক সেতু লালনশাহ্ সেতু। এটি পাবনাজেলার ঈশ্বরদী উপজেলার অন্তর্গত পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রীজ সংলগ্ন। ২০০১ সালের১৩ জানুয়ারী মোতাবেক ৩০ পৌষ, ১৪০৭ বঙ্গাব্দে রোজ শনিবার গণপ্রজাতন্ত্রীবাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর ভিত্তি প্রস্তরস্থাপন করেন। ব্রীজটির নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৭ মে, ২০০৪ সালে । যানবাহনচলাচল আরম্ভ হয় ১৮ মে, ২০০৪ সালে।

যানবাহনচলাচল উদ্বোধন করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক মাননীয়প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ব্রীজটি ১৭৮৬ মিটার লম্বা, ১৮.১০ মিটারপ্রস্থ এবং এতে ১৭টি পিলার/খুটি রয়েছে। একটি খুটি হতে আরেক খুটির দূরুত্ব১০৯.৫০ মিটার। তবে ব্রীজের দুই পাশের ঝঃধৎঃরহম চড়রহঃ এ দুটি খুটি পাশাপাশিস্থাপিত। যার দুরুত্ব ৭১.৭৫ মিটার। ব্রীজের কানেকটিং রোড ১৬.০০ কিঃ মিঃ।ব্রীজের পশ্চিম পার্শ্বে ৬.০০ কিঃ মিঃ (ভেড়ামারা- কুষ্টিয়া)। পূর্বপার্শ্বে পাকশী- ঈশ্বরদী)। ব্রীজটি দুই লাইন বিশিষ্ট। ব্রীজের মাঝে একটিডিভাইডার রয়েছে। পদ্মানদীর উপর লালনশাহ্ সেতু নির্মাণের ফলে বাংলাদেশেরদক্ষিণ অঞ্চলের সাথে উত্তর ও পশ্চিম অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা সংক্ষিপ্ত ওসহজ হয়েছে।

 

ঈশ্বরদী বিমান বন্দরঃ

 

ঈশ্বরদীবিমান বন্দরটি উপজেলা সদর হতে প্রায় ৫কিঃমিঃ পশ্চিমে অবস্থিত। ৪৩৬.৬৫ একরজমি বাংলাদেশ বেসরকারী বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের নামে অধিগ্রহণ করে স্থাপনারনির্মাণ কাজ শেষে ২৬/০৩/১৯৬১ খ্রিঃ তারিখে ঈশ্বরদী বিমান বন্দরে বাংলাদেশবিমানের ফ্লাইট প্রথম চালু হয়। দীর্ঘদিন বিমান বন্দরটি চালু থাকার পর০৫/০৪/১৯৯০ খ্রিঃ তারিখে ১ম বারের মত বন্ধ হয়ে যায়। ১৭/০৭/১৯৯৪ খ্রিঃতারিখে বিমান বন্দরটি পুনরায় চালু হয়। কিন্তু ০৩/১১/১৯৯৬ খ্রিঃ তারিখেপুনরায় বাংলাদেশ বিমান ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যায়। এর পর ১০/০৫/১৯৯৮ খ্রিঃ তারিখহতে এ বিমান বন্দর হতে এয়ার পারাবত ফ্লাইট চালু হয়।

কিছুদিনচলার পর ২৮/০৬/১৯৯৮ খ্রিঃ তারিখ এ ফ্লাইটটিও বন্ধ হয়ে যায়। অদ্যাবধি বিমানবন্দরটিতে সব ধরণের ফ্লাইট চলাচল বন্ধ আছে। তবে কোন সিডিউল ফ্লাইট নাথাকলেও অফিসিয়ালভাবে বিমান বন্দরটি চালু রয়েছে। যোগাযোগ যন্ত্রপাতিকার্যক্রম রয়েছে। বিমান শাখায় ১৫জন জনবল কর্মরত আছে, তবে কন্ট্রোলটাওয়ার/ফায়ারের জনবল নেই। বিমান বন্দরের রানওয়ে, এপ্রোচ, টেক্সিওয়ে সবকিছুকার্যক্ষম আছে। ৪৩৬.৬৫ একর জমির মধ্যে বিমান বন্দর সংলগ্ন মিলিটারী ফার্মকেদেওয়া আছে ২৯০.৭৪ একর। বিমান বন্দরের আওতায় ১৪৫.৯১ একর জমি আছে। কিন্তুপ্রকৃত পক্ষে এখন বিমান বন্দরের দখলে রয়েছে মাত্র ৯৬.০০ একর জমি। অবশিষ্টজমি মিলিটারী ফার্মের দখলে আছে। বাংলাদেশ সরকার তথা বাংলাদেশ বেসামরিকবিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিমান বন্দরটি পুনরায় চালু করার আবেদনজানাচ্ছে ঈশ্বরদীবাসী।

 

রুপপুর পারমানবিক শক্তি প্রকল্পঃ

 

ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের রূপপুর, চর রূপপুর ও দিয়াড় বাঘইল এ ৩টিমৌজায় প্রকল্পটি অবস্থিত। এটি বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের একটি প্রকল্প।দেশের বিদ্যুৎ খাতের প্রার্থিত প্রবৃদ্ধি সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেরলক্ষ্যমাত্রাসমূহ অর্জনের অন্যতম প্রধান শর্ত বলে বিবেচিত। বিদ্যুৎ খাতেরচাহিদা ব্যবস্থাপনায় পারমানবিক প্রযুক্তি একটি সুবিধাজনক প্রকল্প। এপ্রযুক্তির প্রেক্ষিতে ৬০ এর দশকে পাবনা জেলার ঈশ্বরদী থানার রূপপুরকে এপ্রকল্পের স্থান হিসেবে নেয়া হয়েছিল।

১৯৬৩সালে ঈশ্বরদী থানার রূপপুর এলাকায় ২৫৯.৯৩ একর জমি এ প্রকল্পের জন্য হুকুমদখল করা হয়। ০৪/০২/১৯৬৭ খ্রিঃ তারিখে জেলা প্রশাসক, পাবনা কর্তৃক উল্লিখিতজমি তদানিন্তন পাকিস্তান এটোমিক এনার্জি কমিশন (বর্তমানে বাংলাদেশ পরমাণুশক্তি কমিশন) এর নিকট হস্তান্তর করা হয়। ১৯৬৪ সালে প্রকল্প স্থাপনেরসুবিধার্থে আবাসিক বাসভবন তৈরীর জন্য ৩১.৫৮ একর জমি হুকুম দখল করা হয় এবংউক্ত সালেই তদানিন্তন পাকিস্তান এটোমিক এনার্জি কমিশন এর নিকট হস্তান্তরকরা হয়। আবাসিক এলাকায় বিভিন্ন টাইপের (গ্রেড-৩ =৪০টি, গ্রেড-৪ =১২টি এবংগ্রেড- ৫=২০টি) মোট ৭২টি আবাসিক ভবনের নির্মাণ কাজ হাতে নেয়া হয়েছিল। এসবভবনের কাজ আনুমানিক ৬০% সম্পন্ন হওয়ার পর স্বাধীনতা যুদ্ধের পূর্বেইনির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। অদ্যাবধি অর্ধনির্মিত এসব ভবনগুলোর নির্মাণ কাজঅসমাপ্ত রয়েছে। এগুলো বর্তমানে পরিত্যক্ত/ব্যবহারের অনুপযোগী। এছাড়াওআবাসিক এলাকায় কিছু ভৌত অবকাঠামো, ৭৫০ কেভিএ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি বৈদ্যুতিকসাব-স্টেশন (বর্তমানে অকেজো), ২০ অশ্ব শক্তিসম্পন্ন একটি পানির ট্যাংকসহপাম্প হাউস, ২ কক্ষ বিশিষ্ট ১টি পাকা মেট্রোলোজিক্যাল বিল্ডিং, ১টি সেমিপাকা অতিথি ভবন এবং ৪ কক্ষ বিশিষ্ট ১টি অস্থায়ী কার্যালয় রয়েছে।

বিভিন্নসময়ে বিভিন্ন বিদেশী উদ্যোক্তা প্রকল্পটি পরিদর্শন করে বিদ্যুৎ কেন্দ্রস্থাপনের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু পরবর্তীতে আর সেগুলো বাস্তবায়িত হয়নি।কারিগরি যথার্থতা প্রতিষ্ঠিত হওয়া সত্ত্বেও বিভিন্ন সমস্যার জন্য প্রকল্পেরকাজ অদ্যাবধি শুরু হয়নি। তবে অর্থ সংস্থানই প্রকল্প বাস্তবায়নের পথেপ্রধান অন্তরায় বলে বিবেচ্য। প্রকল্প এলাকার অব্যবহৃত ২৫৯ একর জমি ১৯৭৮ সালহতে ভূমিহীন চাষীদের চাষাবাদের জন্য একসনা লীজ দেয়া হয়েছে। বর্তমানে ১জনভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ মোট ১৮জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রক্ষণাবেক্ষণ ওনিরাপত্তা কাজে নিয়োজিত আছেন। এই এলাকাটির বিপুল পরিমাণ জমি ও সম্পদঅব্যবহৃত অবস্থায় রয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা গেলেউত্তরাঞ্চলসহ সমগ্র দেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানী খাতে অভাবনীয় উন্নতি সাধিত হবেবলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাথে আলোচনা করে জানা যায়। বিভিন্ন সময়েবাংলাদেশ আনবিক শক্তি কমিশনের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ প্রকল্প এলাকাপরিদর্শন করেছেন। গত ১৫/১০/২০০৮ খ্রিঃ তারিখ কোরিয়ান অ্যামব্যাসেডর এবংবাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান যৌথভাবে প্রকল্পটি পরিদর্শনকরেন। সর্বশেষ ২৫/০৪/২০০৯ খ্রিঃ তারিখ শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব ও পরমাণুশক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান এ প্রকল্পটি পরিদর্শন করেন। আশা করা যায়, শীঘ্রইপ্রকল্পটির বাস্তবায়ন হবে।

 

ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশনঃ

 

বৃটিশকালথেকেই ঈশ্বরদী একটি গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে জংশন। এ ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনটিপাকশী হার্ডিঞ্জ সেতু নির্মিত হওয়ার পূর্বে বর্তমান ঈশ্বরদী এয়ার পোর্ট এরনিকটবর্তী স্থানে অবস্থিত ছিল। সেই সময় পদ্মানদীর পশ্চিম পাড়ে রেলওয়ে ঘাটএবং পূর্ব পাড়ে রেলওয়ে সাড়া ঘাট লাইন ছিল। এপাড় ওপাড় নদী পথে রেলওয়ে ফেরীতেযাত্রী ও মালামাল পারাপার করা হত।পরে পাকশী হার্ডিঞ্জ সেতু চালু হওয়ার পরঈশ্বরদী স্টেশনটি বর্তমান স্থানে অবস্থিত হয়। সেই থেকে ভেড়ামারা স্টেশন হতেসোজা পাকশী হার্ডিঞ্জ সেতু পার হয়ে ঈশ্বরদী জংশন স্টেশন হয়ে আজিমনগর ওআব্দুলপুর পর্যন্ত নতুন লাইন চালু হয়। ০১/৭/২০০৯ খ্রিঃ সাঁড়া-ঈশ্বরদী হতেভাঙ্গুড়া স্টেশন পর্যন্ত রেললাইন চালু হয়। বর্তমানে ৪টি গুরুত্বপূর্ণ রেলপথঈশ্বরদীর সাথে সংযুক্ত। এগুলো হল ঈশ্বরদী-খুলনা, ঈশ্বরদী-রাজশাহী, ঈশ্বরদী-পার্বতীপুর এবং ঈশ্বরদী- ঢাকা। 

 

 

এক নজরে চাটমোহর উপজেলা ও তার ইউনিয়নসমুহ

চাটমোহর উপজেলা মানচিত্র

এক নজরে চাটমোহর উপজেলাঃ 

উপজেলার নাম

চাটমোহর

আয়তন

৩১০ বর্গকিলোমিটার।

জনসংখ্যা

২,৪১,৩২৩জন

ঘনতবসতি

৭৭৮.৪৬/বর্গকিলোমিটার

নির্বাচনীএলাকা

৭০, পাবনা-৩

ইউনিয়ন

১১ টি

পৌরসভা

০১ টি

খানা

৫২,৪৪৯ টি

মৌজা

১৬৬ টি

গ্রাম

২৫৮ টি

সরকারীহাসপাতাল

০১ টি

স্বাস্থ্যকেন্দ্র/ক্লিনিক

১০ টি

কমিউনিটিক্লিনিক

২৯ টি।

পোষ্টঅফিস

১২ টি

নদ নদী

০৩ টি(গুমানী, বড়াল ও চিকনাই)

হাট-বাজার

২৭ টি

ব্যাংক

০৮ টি

উপজেলার পটভূমিঃ

 

উপজেলার নামকরণঃ

কথিতআছে যে, খ্রীষ্টিয় পঞ্চদশ শতাব্দীতে এখানে সোনার মোহর ক্রয়-বিক্রয় হতো।তখন ডাকাতদের উপদ্রব বেশী থাকায় বিক্রেতারা ডাকাতদের কবল থেকে রক্ষা পাওয়ারজন্য চটের থলিতে সোনার মহর নিয়ে এসে বিক্রি করতো। সোনারমোহর চটেরথলিতে ভরে নিয়ে এসে বেচা-কেনা হতো বলে এখানকার নামকরণ করা হয়েছেচাটমোহর

 

উপজেলার ভৌগলিক অবস্থানঃ

চাটমোহরউপজেলা পাবনা জেলার অন্যতম বৃহৎ উপজেলা। এটি বড়াল নদীর তীরে অবস্থিত। এরউত্তরে সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলা, দক্ষিণে পাবনা জেলার আটঘরিয়া উপজেলা, পূর্বে পাবনা জেলার ভাঙ্গুড়া উপজেলা এবং পশ্চিমে নাটোর জেলার বড়াইগ্রামউপজেলা অবস্থিত।

 

বর্তমান উপজেলার ইতিহাসঃ

পাবনাজেলার চাটমোহর উপজেলা একটি অতি প্রাচীণ ও প্রসিদ্ধ জনপদ। এককালে এ উপজেলারসিংহভাগ অংশ তথা বর্তমান হান্ডিয়াল, নিমাইচড়া, ছাইকোলা ও বিলচলন ইউনিয়নচলনবিলের অমত্মর্ভূক্ত ছিল। ধীরে ধীরে এখানে জনবসতি গড়ে ওঠে বর্তমানে একটিঅমিত সম্ভাবনার উপজেলায় পরিণত হয়েছে। ব্রিটিশ শাসনামলে এই এলাকার অপরাধনিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য এখানে কেবলমাত্র একটি পুলিশ ষ্টেশন ছিল। পরবর্তীতেউহা ‘থানা’নামে পূণনামকরণ করা হয়। ‘থানা’যখন এলাকার বিভিন্ন উন্নয়নকর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয় তখন প্রথমে এটি ‘আপগ্রেড থানা’এবংপরবর্তীতে ‘উপজেলায়’রূপামত্মর করা হয়। আয়তন এবং জনসংখ্যা উভয় দিক দিয়েচাটমোহর পাবনা জেলার তৃতীয় বৃহত্তম উপজেলা। ১৯৪৯ সালে এখানে থানাপ্রতিষ্ঠিত হয়, ১৯৬০ সালে থানা উন্নয়ন সার্কেলে রূপামত্মর করা হয় এবং ১৯৮২সালে উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৮২ সালের ১৫ ডিসেম্বর তারিখে তৎকালীনআঞ্চলিক সামরিক আইন প্রশাসক কর্নেল এ.এম. হাম্মাদ কর্তৃক চাটমোহর থানা কে‘আপগ্রেড থানা’হিসেবে ঘোষণা করা হয় যা পরবর্তীতে ‘উপজেলা’হিসেবে পরিচিতিলাভ করে।

 

উপজেলার সার্বিক তথ্যাদিঃ

বাংলাদেশেরবৃহত্তম বিল ‘চলনবিল’চাটমোহর উপজেলা সংলগ্ন উত্তর পার্শ্বে অবস্থিত।বর্ষাকালে এখানে মনোরম দৃশ্যের অবতারনা হয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তথেকে এ নয়নাভিরাম দৃশ্য উপভোগ করার জন্য চলনবিলে সমবেত হয়। অতীতে চাটমোহরউপজেলা ব্যবসার একটি অন্যতম প্রসিদ্ধ এলাকা হিসেবে পরিচিত ছিল। বর্তমানে এএলাকা ব্যবসার প্রধান কেন্দ্র বিন্দু না হলেও অতীতের ঐতিহ্য ধরে রেখে অনেকমানুষ ব্যবসার সাথে জড়িত আছে। উপজেলার ‘মির্জাপুর বাজার’নদী বন্দর হিসেবেসুপরিচিত ছিল। এখনো নদীপথে বিশাল নৌকা যোগে ঢাকা থেকে মাল আনা-নেওয়ার কাজেমির্জাপুর বাজারকে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু নদীর নাব্যতা হ্রাস পাওয়ায় সবসময়নৌকা চলাচল করতে পারে না। ব্যবসায়ীদের নিকট বর্তমানে নদীপথে পণ্য পরিবহনআর সুবিধাজনক পর্যায়ে নেই। চাটমোহর উপজেলার অভ্যন্তরে শতকরা ৬০% এলাকায়সরাসরি যোগাযোগের ব্যবস্থা নাই। বিগত সময়ে অপরিকল্পিত উন্নয়নের ফলে একসময়েরখরস্রোতবহতা বড়াল নদীকে বাঁধ দিয়ে চাটমোহরকে একটি মৃতপ্রায় নগরীতে পরিনতকরা হয়েছে। অনতিবিলম্বে বাঁধ অপসারণ করে নাব্যতা ফিরিয়ে আনার প্রয়োজনীয়ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক মৃতপ্রায় এ নগরে পুণরায় প্রাণ সঞ্চার সম্ভব। রাজধানীঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা পর্যায়ের শহরগুলোর সংগে সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকায়বিভিন্ন এলাকার সংগে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ রয়েছে চাটমোহর উপজেলার। বঙ্গবন্ধুবহুমূখী সেতু স্থাপিত হওয়ায় উত্তরবঙ্গের ভাগ্যাহত অনেকেই জ্বালানী গ্যাসেরসুবিধা পেলেও চাটমোহরবাসী এখনও এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত আছেন। চাটমোহরউপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ রয়েছে ২২,৪৬০ হেক্টর আবাদযোগ্য ভূমি যার প্রায়১০০০ হেক্টর ভূমি অব্যবহৃত অবস্থায় রয়েছে। এককালে শস্যভান্ডার হিসেবেপরিচিত অমিত সম্ভাবনার এই অঞ্চল প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের অভাবেআজ পশ্চাদপদ এলাকায় পরিনত হয়েছে। প্রাণহীন এই দেহে জীবনের সঞ্জীবন ঘটাতেচাই যথাযথ পরিকল্পনা এবং তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন। চাটমোহর উপজেলায় মাধ্যমিকবা উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে কোন সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। বে-সরকারীশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয ১৪৬টি, উচ্চ বিদ্যালয়৪২টি, কলেজ ১৪টি ও মাদ্রাসা ৩৯টি। চাটমোহর উপজেলায় ১৬ বৎসরের উপরে শিক্ষারহার পুরুষ ২৯.৩% এবং মহিলা ১৮.৮%। চাটমোহর পৌর এলাকায় শিক্ষার হার ৪৩.৪%, পুরুষ ৫০.৫৬% এবং মহিলা ৪৯.৪৪%। রাজধানী শহর ঢাকা হতে চাটমোহর এর দূরত্বপ্রায় ২০০ কিলোমিটার। রাজধানী এবং বিভাগীয় শহর উভয়ের সাথেই এ উপজেলার রেল ওসড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিদ্যমান আছে। জেলা সদর থেকে এর দূরত্ব ৩২ কিলোমিটারএবং বিভাগীয় শহর থেকে দূরত্ব ১১০ কিলোমিটার। এখানে ডিজিটাল এক্সচেঞ্জ এরআওতায় উন্নত টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বিদ্যমান। চাটমোহর উপজেলার আভ্যমত্মরীণযোগাযোগ ব্যবস্থা ততটা উন্নত নয়। হান্ডিয়াল ও নিমাইচড়া ইউনিয়নে এখনো সড়কযোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয় নাই।

উল্লেখযোগ্য স্থান বা স্থাপনা:চাটমোহরের উল্লেখযোগ্য স্থাপনার মধ্যে রয়েছে , চাটমোহর ঐতিহাসিক শাহী মসজিদসমাজ শাহী মসজিদ, চাটমোহরহান্ডিয়াল জগন্নাথ মন্দির, হরিপুর জমিদারবাড়ীর পুকুর, রাজা চন্দ্রনাথ ও বাবু শম্ভুনাথ উচ্চ বিদ্যালয়মথুরাপুর মিশন, চলনবিল ইত্যাদি

 

 

এক নজরে ফরিদপুরউপজেলা ও তার ইউনিয়নসমুহ

ফরিদপুর উপজেলার মানচিত্র

এক নজরে ফরিদপুর উপজেলা

আয়তনঃ

 

১৪৫.৪৭ কিঃ মিঃ|

জনসংখ্যাঃ

 

১২৩৯১৯ জন।

ঘনত্বঃ

 

৮৫১.৮৫ জন/বর্গ কিঃ মিঃ।

নির্বাচনী এলাকাঃ

 

৭০ পাবনা-৩।

খানা/ ইউনিয়নঃ

 

ইউনিয়ন ছয়টি; খানার সংখ্যা ২৪৩৬৪।

মৌজাঃ

 

৫৬ (ছাপান্ন) টি ।

সরকারী হাসপাতালঃ

 

১ (এক) টি।

স্বাস্থ্য কেন্দ্র/ক্লিনিকঃ

 

৫ (পাঁচ) টি।

পোষ্ট অফিসঃ

 

১২ (বার) টি।

নদ-নদীঃ

 

৫ (পাঁচ) টি, (বড়াল, চিকনাই, গোমতি, গোহালা, রুকসী)।

হাট-বাজারঃ

 

৯ (নয়) টি।

ব্যাংকঃ

 

৪ (চার)টি, (সোনালী, রূপালী, জনতা, রাকাব)।

এনজিওঃ

 

২৭ (সাতাইশ) টি।

উপজেলা পটভূমি

সিরাজগঞ্জেরতাড়াশের জমিদার বনওয়ারীলাল রায় তাড়াশ থেকে পাবনা যেতেন ফরিদপুর চিকনাই নদীহয়ে। বনওয়ারীলাল রায়ের পুর্ব পুরুষ ছিলেন ‘‘ চৌধুরী রায়বাহাদুর’’ তাড়াশ এরজমিদার বাসুদেব তালুকদার। তিনি ঢাকার ইসলাম খার চাকুরী করতেন। নবাব তারকাজে সন্তষ্ট হয়ে ‘‘ চৌধুরী তাড়াশ’’ নামক সম্পত্তি তাকে জায়গীর হিসেবে দানকরে ‘‘ রায় চৌধুরী’’ উপাধি দেন। এর ২০০ মৌজা নিয়েই ‘‘ চৌধুরী তাড়াশ’’ জমিদারী সৃষ্টি হয়। ফরিদপুর থানার বর্তমান বনওয়ারীনগর এলাকা গভীর বন জঙ্গলেপরিপূর্ণ ছিল। জনশ্রুতি রয়েছে এই জঙ্গলে তিনি ভেক কর্তৃক সর্প ভক্ষণেরদৃশ্য দেখে এই স্থানটি সৌভাগ্যের মনে করে তাড়াশের জমিদার বাড়ীর অনুরূপচারদিকে দীঘি খনন করে মাঝখানে সুন্দর বাড়ি নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে তারনামানুসারে এ স্থানের নাম বনওয়ারীনগর রাখা হয়। পরবর্তীতে তিনি তাড়াশ থেকেজমিদারীর প্রধান অংশ বনওয়ারীনগর স্থানান্তর করেন। কথিত আছে রাজশাহীর শাহমুখদম (রহঃ) এর ভাব শিষ্য শাহ ফরিদ (রহঃ) তাঁর নির্দেশে কুমিরের পিঠে চড়েঅত্র এলাকায় ইসলাম প্রচারের জন্য আসেন। তাঁর নামানুসারে এ এলাকার নাম রাখাহয় ফরিদপুর। বর্তমানে তাঁর স্মৃতি বিজরিত মাজারের অংশ বিশেষ এবং শাহ ফরিদনামে একটিমসজিদ পারফরিদপুর গ্রামে রয়েছে।

 

ভৌগলিক অবস্থানঃউত্তরে ভাংগুড়া ও উল্লাপাড়া, পূর্বে শাহজাদপুর, দক্ষিণে সাঁথিয়া ও আটঘরিয়া, পশ্চিমে চাটমোহর ও ভাংগুড়া উপজেলা অবস্থিত।

ঐতিহাসিক স্থাপনা :ফরিদপুর জেলা উল্লেখযোগ্য স্থাপনার মধ্যেউপজেলা পরিষদ মসজিদ, জমিদারের ট্রেজারী, জমিদারের হাওয়া খানা, জমিদারের কাচারীজমিদারের জলসা ঘর, নাট মন্দির, জমিদার বাড়ী ওরাণীর ঘাট, শেখ শাহ ফরিদ (রাঃ) মসজিদ, অন্যতম

 

 

 


এক নজরে আটঘরিয়াউপজেলা ও তার ইউনিয়নসমুহ

এক নজরে আটঘরিয়া উপজেলা

উপজেলার নাম

আটঘরিয়া

আয়তন

১৮৬.১৫বর্গ কিলোমিটার

জনসংখ্যাঅনুযায়ী)

১,৩৮,৪৭৬জন (২০০১ সনের আদম শুমারী

ঘনত্ব

৮২১জন প্রতি বর্গ কিঃমিঃ

নির্বাচনীএলাকা

৭১পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া)

ইউনিয়ন

০৫টি

পৌরসভা

০১টি

খানা

২৯,৫৭৫

মৌজা

১১১টি

গ্রাম

১৩০টি

সরকারীহাসপাতাল

০১টি

স্বাস্থ্যকেন্দ্র/কিলনিক

১৭টি

পোষ্টঅফিস

০৫টি

নদ-নদী

০৩টি (চিকনাই, চন্দ্রাবতী ও রত্মাই)

হাট-বাজার

১১টি

ব্যাংক

০৭টি

মহাবিদ্যালয়

০৭টি

উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়

২০টি

নিমনমাধ্যমিক বিদ্যালয়

০৪টি

সিনিয়র মাদ্রাসা

০৩টি

দাখিলমাদ্রাসা

১৫টি

সরকারীপ্রাথমিক বিদ্যালয়ঃ

৪৪টি

রেজিঃবে-সরকারী প্রাথমিকবি

২৯টি

মসজিদ

১৬১টি

এতিমখানা

১০টি


উপজেলার পটভূমিঃ

 

উপজেলার নামকরণঃ

আটঘরিয়াউপজেলার নামকরণ সম্পর্কে বিভিন্ন জনশ্রুতি প্রচলিত আছে। জানা যায়, তৎকালেসর্বপ্রথম এই এলাকায় আট ব্যক্তি বসতবাটি নির্মাণ করে বসবাস করতে থাকলে আটঘর বসতি থেকে আটঘরিয়া নামের উৎপত্তি ঘটে । অপর একটি সূত্র থেকে জানা যায়, ভারত উপ-মহাদেশের চন্দ্রগুপ্তের শাসনামলে (খ্রিঃ পূর্ব ৩০০-৩২৪) ‘‘ বঙ্গবিভাগ’’ নামে যে এলাকা ছিল পাবনা ছিল তার অন্তর্ভূক্ত। তৎকালে এখানে ‘‘ পোদজাতি’’ এর মধ্যে থেকে আট ঘর বসতি গড়ে উঠায় নাম হয় আট ঘর এলাকা বা আটঘরিয়া ।

কারো কারো মতে ১৮৫৭ খ্রিঃ সিপাহী বিদ্রোহ সংগঠিত হলে বিদ্রোহের অপরাধে আটজন সিপাহীকে এই এলাকার দ্বীপে নির্বাসনে দেয়া হয়। নির্বাসিত সিপাহীগণপরবর্তীতে সেখানে বসবাস করতে থাকে। নির্বাসিত ৮ জন সিপাহী ৮টি ঘর নির্মাণকরে বসবাস করায় স্থানটির নাম হয় আটঘরে বা পরে আটঘরিয়া।

 

সন তারিখ যাই হোক না কেন এই এলাকায় আট ঘর বসতি থেকে যে আটঘরিয়া নামের উৎপত্তি হয়েছে এতে সন্দেহ নেই।

 

উপজেলার ভৌগলিক অবস্থানঃ

আটঘরিয়াউপজেলা পাবনা জেলার একটি ছোট উপজেলা। এটি পাবনা-চাটমোহর সড়কের পার্শ্বেপূর্বদিকে এবং পাবনা জেলা সদরের উত্তর-পূর্ব দিকে অবস্থিত। এর উত্তরেচাটমোহর, ভাংগুড়া এবং ফরিদপুর উপজেলা, দক্ষিণ-পূর্বে পাবনা সদর ও ঈশ্বরদীউপজেলা, পূর্বে সাঁথিয়া উপজেলা এবং পশ্চিমে নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলাঅবস্থিত।

বর্তমান উপজেলার ইতিহাসঃ

পাবনাজেলার একটি উপজেলা আটঘরিয়া। ঐতিহাসিকদের মতে মহাভারত বিরোচিতপান্ডবভ্রাতাগনের রাজত্ব ছিল এই অঞ্চলে। কোন এক সময় পান্ডবগন পাবনার মাটিতেযজ্ঞ করেছিলেন। তখন থেকে এই অঞ্চলটি পাবনা নামে পরিচিত। পাবনার উত্তরেবৃহৎ চলন বিল যা চাটমোহরের দক্ষিণ সীমানা পর্যন্ত বিস্তৃত। পশ্চিম- দক্ষিণেপদ্মা নদী এবং পূর্বদিকে যমুনা নদী প্রবাহিত ছিল। মোট কথা পাবনার প্রায়গোটা অঞ্চল ছিল জলমগ্ন। ভূ-প্রকৃতির গঠন হিসেবে তখন পাবনা মূল ভূ-খন্ডেরঅসিতত্ব ছিল যে স্থানে তা ঈশ্বরদীর কিছু অংশসহ গোটা আটঘরিয়া যা পদ্মার শাখাচন্দ্রবতী নদীর পূর্ব তীরে অবস্থিত ছিল।

ঐতিহাসিকসূত্রে জানা যায়- অতীতে পাবনা জেলায় চোর-ডাকাতের চরম উৎপাত ছিল। বিশেষ করেবৃহৎ চলনবিল অঞ্চলের ডাকাতদল রত্নাই ও চন্দ্রাবতী নদী হয়ে দক্ষিণ অঞ্চলেঅবাধে চলাফেরা করতো এবং প্রায়ই ডাকাতিতে লিপ্ত হতো। এলাকার জান-মালরক্ষার্থে প্রথমে আটঘরিয়াতে একটি পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করা হয়। পরবর্তীকালেআটঘরিয়ার মৃত লালন সিংহের স্ত্রী মাতঙ্গিনী সিংহ ১১ বিঘা জমি দান করেন।উক্ত জমির উপরই ১৯৩৪ সালে আটঘরিয়া থানা(পুলিশ স্টেশন) ভবন নির্মান হয়।পাবনা জেলা শহরের ১৩ কিঃমিঃ উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত এই আটঘরিয়া উপজেলা।

১৯৬২সালে দেবোত্তর ও কর্ন্দপপুর মৌজায় ১৯.২২ একর জমির উপর থানা প্রশিক্ষন ওউন্নয়ন কেন্দ্র (ঢিটিডিসি) গড়ে উঠে। ১৯৮৩ সালে প্রশাসনিক কাঠামোরপরিবর্তনের ফলে আটঘরিয়া থানাকে উপজেলায় রূপান্তরিত করা হয় এবং ১৪সেপ্টেম্বর/১৯৮৩ খ্রিঃ তারিখে আনুষ্ঠানিকভাবে আটঘরিয়া উপজেলার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।

উপজেলার সার্বিক তথ্যাদিঃ

আটঘরিয়া উপজেলা চারটি মৌজা নিয়ে দেবোত্তর নামক স্থানে অবস্থিত। এর আয়তন ৫.৯৩ বর্গ কিলোমিটার। মোট জনসংখ্যার ৫১.৪১% পুরুষ এবং ৪৮.৫৯%মহিলা। তবেপ্রাচীনকাল থেকেই এ উপজেলায় বাগদি ও বুনোরা নামক আদিবাসীরা উপজেলার ধলেশ্বর ও খিদিরপুরেবসবাস করে আসছে।মূলতঃকৃষি ভিত্তিক অর্থনীতি এ উপজেলার মূল চালিকা শক্তি। এ উপজেলার মানুষেরপ্রধান পেশা কৃষি যা মোট জনসংখ্যার ৪৬.১৭%। বর্তমানে এ উপজেলার মানুষ শুধুকৃষির উপর নির্ভরশীল না হয়ে বিভিন্নপেশা বেছেনিয়েছে। অন্যান্য পেশার মধ্যে হাঁস-মুরগীর খামার, দুগ্ধ খামার, গরু-ছাগল পালন ও তাঁত শিল্প অন্যতম। উৎপাদিতফসলের মধ্যেধান, পাট, ইক্ষু, পান, কলাই, সরিষা, পিঁয়াজ, রসুন, বেগুন, আলু, কাঁচামরিচ, পটল উল্লেখযোগ্য। তবে সাম্প্রতিককালে এ উপজেলায় প্রচুর পরিমান সবজিবিশেষ করে সিম এবং মাছ চাষ করা হচ্ছে।

উল্লেখযোগ্য স্থান বা স্থাপনা

কালামনগর(বংশীপাড়া) মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধঃ

আটঘরিয়াউপজেলার মাজপাড়া ইউনিয়নের সোনাকান্দর ও বংশীপাড়া গ্রামের মাঝখানেচন্দ্রাবতী নদীর ঘাট। এ ঘাটেই ৬ নভেম্বর, ১৯৭১ সালে সংগঠিত হয়েছিল একরক্তক্ষয়ী যুদ্ধ । এ যুদ্ধ জেলার স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এক বিশেষস্থান দখল করে আছে।

বেরুয়ান জামে মসজিদঃ

চাঁদভাইউনিয়নের বেরুয়ান নামক স্থানে একটি প্রাচীন মসজিদ আছে। স্থানীয় জনগনেরভাষ্য মতে মসজিদটি আনুমানিক ৩০০ বছর আগে নির্মিত হয়েছে মর্মে জানা যায়।বেরুয়ান জামে মসজিদখিদিরপুর জমিদারের কাচারীবাড়ী,খিদিরপুর, মাজপাড়া

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

এক নজরে বেড়া উপজেলা ও তার ইউনিয়নসমুহ

বেড়া উপজেলার মানচিত্র

এক নজরে বেড়া উপজেলা

উপজেলার নাম

বেড়া

 

আয়তন

২৪৮.৬০ ব.কি.মি।

 

জনসংখ্যা

২৩১,৪৩০ জন (২০০১ এর শুমারী অনুযায়ী)

 

 

পুরুষ১২০,৬১৫ জন।

 

 

মহিলা ঃ ১১০,৮১৫ জন।

 

ঘনত্বঃ

৯৩১ জন প্রতিবর্গকিমিতে।

 

পৌরসভা:

১ টি (প্রথম শ্রেণী)।

 

ইউনিয়ন:

৯ টি।

 

মৌজা

১৬১ টি ।

 

নির্বাচনী এলাকাঃ

দুটি(পাবনা -২ এর জন্য ৫টি ইউনিয়ন এবং বাকী

ইউনিয়ন ও পৌরসভা পাবনা-১ আসনের সাথে সম্পৃক্ত)

 

ভোটার সংখ্যা (ছবিসহ)

 

১,৪৯,৫৮৯ জন।

পুরুষঃ ৭৪,৪৫৯ জন;

মহিলাঃ ৭৫,১৩০জন।

(হালনাগাদকৃতআরো ৩,৮৪৮ জন পুরুষ ও ৩,২০৭

জন মহিলা মোট ৭,০৫৫জন ভোটার যুক্তহবে)

 
 

সরকারী হাসপাতাল

১ টি (৩১শয্যার)।

 

পোস্ট অফিস

১৩ টি।

 

নদনদী

পদ্মা, যমুনা, ইছামতি, হুরাসাগর।

 

হাটবাজার

১৭ টি।

 

ব্যাংক

১০ টি।

 

এনজিও

৩০ টি।

 

ইউনিয়ন ভুমি অফিস

৭ টি।

 

রেস্ট হাউজ

২ টি ।

 

ডাকবাংলো

১টি।

 

সরকারী/রেজিঃ প্রাথঃ বিদ্যালয়

১০৭ টি।

 

কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়

০২ টি।

 

কিন্ডারগার্টেন

১৬ টি।

 

এবতেদায়ী মাদ্রাসা

৪ টি।

 

মাধ্যমিক স্কুল

১৮ টি।

 

মাদ্রাসা

৭ টি(আলীম মাদ্রাসাঃ ২টি)।

 

কলেজ

৪ টি।

 

ডিগ্রি কলেজ

২ টি।

 

কারিগরী কলেজ

১ টি।

 

সাক্ষরতার হার

৩৩.৫৪% (পুরুষ ৩৮.০৯%,

মহিলা ২৮.০৬% )

 

পাবলিক লাইব্রেরী

৪ টি।

 

মসজিদঃ ১৫৫টি মন্দির

৪৪ টি।

 

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন

বধ্যভূমিচরপাড়া এবং দয়ালনগর

, নগরবাড়ীঘাট।

 

মোট খাস জমির পরিমান

১২৩১.৭১একর।

 

বন্দোবস্তকৃত খাসজমি

৯৯৬.৯৮ একর।

 

বন্দোবস্ত যোগ্য খাসজমি

২৩৪.৭৪ একর।

 

উপকারভোগীর সংখ্যা

৩৬০ জন।

 

আদর্শগ্রাম

৩ টি ।

 

 

১. দয়ালনগর আদর্শ গ্রাম।

 

 

২. কল্যাণপুর আদর্শ গ্রাম ।

 

 

৩. নতুন মাছখালী আদর্শ গ্রাম।

 

জলমহাল

( ২০ একরের নিচে) ৭টি ;

( ২০ একরের উর্ধ্বে) ৫টি।

 

মোট রাস্তা

৩৩৪ কিঃ মিঃ।

২৪৮ কিঃ মিঃ।

পাকা রাস্তা-৮৬ কিঃ মিঃ ; কাচা রাস্তা

 

উপজেলা সড়ক

০৬ টি।

 

ইউনিয়ন সড়ক

১৩ টি।

 

গ্রামীন সড়ক- এ

৯০ টি।

 

গ্রামীন সড়ক বি

৭৮ টি।

 

মোট চাষযোগ্য জমি

১৫,২৭০হেক্টর।

 

সেচ এলাকা

৫,৭০০হেক্টর।

 

একফসলী জমি

৪২৭০হেক্টর।

 

দোফসলী জমি

৯০০০ হেক্টর।

 

ত্রিফসলী জমি

২০০০হেক্টর।

 

নেট শস্য এলাকা

১৭,২৭০হেক্টর।

 

মোট শস্য উৎপাদন এলাকা

২৮,২৭০কিমি।

 

মোট কৃষক

৪০,০০০।

 

প্রধান উৎপাদিত ফসল

ধান, পাট, সড়িষা, মাসকলাই আরচর এলাকায় বাদাম, তৈলবীজ।

 

ইটভাটা

৭ টি।

 

বরফকল

৫ টি।

 

রাইসমিল

৬ টি।

 

স মিল

৮২ টি।

 

তেল মিল

১০ টি ।

 

আটা মিল

১০ টি ।

 

তাঁত শিল্প

আনুমানিক৫০০ টি ।

 

রেজিস্টার্ড গাভীর খামার

৭৮৭ টি।

 

পোল্ট্রি খামার

৭২ টি।

 


উপজেলার পটভূমিঃ

 

উপজেলার নামকরণের পটভুমিঃ

 

বেড়ার ইতিহাসঃ

জনশ্রুতি আছে যে, আরবী ‘‘বেড়ুহা’’শব্দের অপভ্রংশ হচ্ছে ‘বেড়া’। এর পূর্বনাম ছিলো শম্ভুপুর। খ্রীস্ট জন্মের পূর্ব হতে উত্তরবঙ্গের নদনদীর সঙ্গমস্থল হিসেবে শম্ভুপুর ব্যাপক পরিচিত ছিল। এই শম্ভুপুরে তাই গড়ে উঠেছিল জনবসতি। নৌপথে জলদস্যুদের আক্রমণ আর প্রমত্তানদীর উত্তাল স্রোত পেরিয়ে বেড়ার নিকটবর্তী হলেই তারা নিজেদের নিরাপদভাবতো। একারণে বেড়া নিরাপদ পোতাশ্রয়ের উদাহরণ হয়ে দাঁড়ায়। যতদূর জানা যায়৮০০ খ্রিস্টাব্দের গোড়ার দিকে আরব বণিকেরা বেড়াতে তাদের অন্যতম প্রধানবাণিজ্যকেন্দ্র গড়ে তোলে। আবার সুলতানী শাসনামলেএকবার আরবদেশে ভয়ঙ্কর এক দুর্ভিক্ষ হয়। সেই দুর্ভিক্ষের সময় এই দেশেরবিভিন্ন অঞ্চল হতে খাদ্যশস্য সংগ্রহ করে বেড়া বন্দরের মাধ্যমে আরবদেশেপাঠানো হয়। ইংরেজ শাসনামলে জলদস্যু নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনিক থানা ‘মথুরা’যমুনার করালগ্রাসে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেলে ১৮২৮ সালে যমুনার পশ্চিম উপকুলেবেড়া নামক স্থানে পুনঃস্থাপিত হয়। ১৯৬০ সালে বেড়া উন্নয়ন সার্কেল হিসেবেএর কার্য পরিধি অনেক বেড়ে যায়। ১৯৮৩ সালের ১৫ এপ্রিল বেড়া থানাকে উপজেলায়উন্নীত করা হয়।

 

প্রশাসনিক ইউনিটঃ

বেড়া উপজেলায় একটি পৌরসভা ও নয়টি ইউনিয়ন রয়েছে। বেড়া পৌরসভাটিপ্রথম শ্রেণীর পৌরসভা। এছাড়া ইউনিয়নগুলি হচ্ছে-হাটুরিয়া-নাকালিয়া, কৈটোলা, চাকলা, নতুন ভারেঙ্গা, পুরান ভারেঙ্গা, জাতসাখিনী, রুপপুর, মাসুমদিয়া, ঢালারচর।বেড়া উপজেলার ভৌগোলিক অবস্থান লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, যমুনা নদী এবং পদ্মা নদী ঘিরে রেখেছে এই উপজেলাটিকে।ইতিহাস থেকে জানা যায় যে, বর্তমান বেড়া থেকে ৪ কিলোমিটার পূর্বেদিকে যমুনানদীর উপকূলীয় এলাকায় সাধুগঞ্জ নামে একটি নদীবন্দর ছিল। ব্রিটিশ শাসনেরপ্রথমদিকে সাধুগঞ্জের নিকটে মথুরা’য় ছিল একটি প্রশাসনিক থানা।তখন বেড়া ছিল একটি চরভূমি। প্রমত্ত যমুনার প্রচন্ড স্রোতেসাধুগঞ্জ এবং মথুরা নদীভাঙনের শিকার হলে থানাটিকে তখন বেড়া’য় স্থানান্তরকরা হয়।কারণ প্রচন্ড নদীস্রোত, প্রমত্তা ঢেউ আর জলদস্যুদের হাত থেকে রক্ষাপাবার জন্য সবাই বেড়াকে বেছে নিত। আরো একটি কথা জনশ্রুতি রয়েছে যে, পারস্যদেশের বণিকেরা এদেশে ব্যবসার জন্য এসেছিল। তাদের ভাষায় তারা ‘বেহড়া’উচ্চারণ করত- যার বাংলা শব্দার্থ ‘নিরাপদ বন্দর’। তাদের উচ্চারণ অপভ্রংশহয়ে ‘বেড়া’হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।বেড়া থানাটি ব্রিটিশ শাসক ওয়ারেন হেস্টিংস এর আমলে ১৮২৮ সালে শুধুমাত্র জলদস্যুদের অপরাধ নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রতিষ্ঠিত হলেওপরবর্তীতে সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য অধিক দায়িত্ব প্রদানের মাধ্যমে মানউন্নীত করে বেড়া সার্কেল প্রতিষ্ঠা করা হয় ১৯৬০ সালে। পরবর্তীতে প্রশাসনিকসংস্কারের আওতায় বেড়া থানাতে উপজেলায় উন্নীত হয় ১৫এপ্রিল ১৯৮৩ সালে।

 

ভৌগোলিক অবস্থান

বেড়া উপজেলার উত্তরে সিরাজগঞ্জজেলার শাহজাদপুর উপজেলা ও চৌহালি উপজেলা, দক্ষিণে রাজবাড়ি জেলার গোয়ালন্দঘাট এবং রাজবাড়ি সদর উপজেলা, পূর্বে সিরাজগঞ্জের চৌহালি এবং মানিকগঞ্জজেলার দৌলতপুর ও শিবালয় উপজেলা এবং পশ্চিমে পাবনা জেলার সুজানগর ও সাঁথিয়াউপজেলা।

 

 

দর্শনীয় স্থান

হুরাসাগর নদীতীরে বেড়া পোর্ট, কৈটোলা পাম্প হাউজ, বেড়া পাম্প হাউজ, বেড়াস্থ পানি উন্নয়ন বোর্ডের রেস্ট হাউজ, জেলা পরিষদ ডাকবাংলো। 

 

 

 

 

 

 

 

 

এক নজরে পাবনা সদর উপজেলা ও তার ইউনিয়নসমুহ

এক নজরে পাবনা সদর উপজেলা

আয়তনঃ

৪৪৩.৯০ বর্গকিঃমিঃ ।

জনসংখ্যাঃ

৪,৭৬,৯৩২ জন।

ঘনত্বঃ

১০৭৪ জন/বর্গ কিঃ মিঃ

নির্বাচনী এলাকাঃ

৭২, পাবনা-৫।

থানা/ইউনিয়নঃ

১ টি পৌরসভা এবং ১০ টিইউনিয়ন।

মৌজাঃ

২৫৯ টি।

সরকারি হাসপাতালঃ

৪ টি।

স্বাস্খ্য কেন্দ্র/ক্লিনিকঃ

১০ টি।

পোষ্ট অফিসঃ

২৮ টি।

নদ-নদীঃ

২ টি।

হাট-বাজারঃ

৩৩ টি।

ব্যাংকঃ

৬১ টি।

রেষ্ট হাউজঃ

পাবনা সদর উপজেলায় কোন রেস্ট হাউজ নাই।

পটভূমি

১৯২৮ সালের ১৬ অক্টোবর তারিখে তৎকালীন রাজশাহী জেলার ৫টি এবং যশোহর জেলার ৩টিথানা নিয়ে পাবনা জেলার সৃষ্টি হয়। ১৮৫৫ সালে সিরাজগঞ্জ থানাকে ময়মনসিংহজেলা থেকে নিয়ে পাবনা জেলার সাথে যুক্ত করা হয়। ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত পাবনা সদরমহকুমা এবং সিরাজগঞ্জ নিয়ে পাবনা জেলা গঠিত ছিল। ১৯৮৪ সালে পাবনা ওসিরাজগঞ্জ দুটি স্বতন্ত্র জেলা হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।

পাবনা সদর উপজেলার মানচিত্র

পাবনা জেলা পদ্মা এবং যুমনা নদীর মিলনস্থলে অবস্থিত। ১৯৪৮ সালে যমুনা নদীকে পাবনা জেলার সীমানানির্ধারক ঘোষনা করা হয়। কাজেই পাবনা একটি প্রাচীন জেলা এবং সদর উপজেলাজেলার প্রানকেন্দ্রে অবস্থিত পূর্বে সাঁথিয়া এবং সুজানগর উপজেলা, পশ্চিমেঈশবরদী উপজেলা, উত্তরে আটঘরিয়াউপজেলা এবং দক্ষিণে ক–ুষ্টয়া জেলা দ্বারা পরিবেষ্টিত এবং পদ্মা ও ইছামতিনদী বিধৌত পাবনা সদর একটি প্রাচীন জনপদ। পাবনা সদর উপজেলার দোগাছী ওগয়েশপুরের তাঁতের কাপড় ও লুঙ্গি দেশবিখ্যাত এবং পাবনা সদর উপজেলায় তাঁতশিল্পের অফুরন্ত সম্ভাবনা আছে। তাঁতশিল্পের এই অফুরন্ত সম্ভাবনাকে সরকারীপৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে জাগিয়ে তোলা সম্ভব বলে আমাদের বিশ্বাস।

 

পাবনা সদর উপজেলার উল্লেখযোগ্য স্থান/স্থাপনা

ভাঁড়ারাশাহী মসজিদ, জোড় বাংলা মন্দির, তাড়াশ বিল্ডিং, পাবনা ক্যাডেট কলেজ, প্রশামিত ভূবন পার্ক শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকুলচমদ্র সৎসঙ্গ তীর্থধাম, মানসিকহাসপাতাল, লাগসই প্রযুক্তি জাদুঘর

 

 

এক নজরে সুজানগর উপজেলা ও তার ইউনিয়নসমুহ

সুজানগর উপজেলার মানচিত্র

এক নজরে সুজানগর উপজেলাঃ

আয়তন৩৩৪.৩৪ বর্গ কিঃ মিঃ

 

সীমানা : পূর্বে বেড়া উপজেলার মাসুমদিয়াইউনিয়ন, পশ্চিমেপাবনা সদর                       উপজেলার চরতারাপুর ইউনিয়ন।উত্তরে সাঁথিয়া উপজেলার খেতুপাড়া এবং আর আতাইকুলা ইউনিয়ন

দক্ষিনে পদ্মা নদী।

 
 
 
 

জনসংখ্যা :মোট ২,৫১,১৯২ জন; পুরুষ ১,৩০,৭৫৭; মহিলা ১,২০,৪৩৫;মুসলমান ২,৪০,৪৪১; হিন্দু ১০,৭৫১।

 
 

·ঘনত্বঃপ্রতি বর্গ কিঃ মিঃ ৯১৮ জন।

 

·শিক্ষার হারঃ৪৬.৬৮ %।

 

·পৌরসভাঃ০১ টি।

 

·ইউনিয়নঃ১০ টি।

 

·পুলিশ স্টেশনঃ০১টি।

 

·পুলিশ ক্যাম্পঃ০৩টি।

 

·খাদ্য গুদাম(এলএসডি)ঃ০৩।টি; প্রতিটির ধারন ক্ষমতা ৫০০মেঃ টন।

 

·টেলিফোন এক্সচেঞ্জঃ০২।টি (একটি ডিজিটাল)।

 

·স্টেডিয়ামঃ০১টি।

 

·মোট ভোটারঃ১,৬২,৭৭৮।

 

·মোট কৃষি জমিঃ৩৪,৯৮০হেক্টর।

 

·মোট রাস্তাঃ৩৮৭কিঃমিঃ (ক) পাকা ৯৮.৭৫ কিঃ মিঃ (খ) কাঁচা ২৮৮.২৫ কিঃমিঃ

 

(গ) সড়ক কাম বাঁধ ৯৭ কিঃমিঃ

 

·মোট সেতুঃ৫০ টি।

 

·কালভার্টঃ১৪৩ টি।

 

 

 

·শিক্ষা প্রতিষ্ঠানঃ(ক) ডিগ্রী কলেজ ০২টি (খ) ইন্টারমিডিয়েট কলেজ ০৩টি (গ) স্কুল এন্ডকলেজ ০৫টি (ঘ) মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২১টি (ঙ) মাধ্যমিকবিদ্যালয় (বালিকা)০৫টি (চ) নিম্ম মাধামিক বিদ্যালয় ০৪টি (ছ) ফাজিল মাদ্রাসা০১টি (জ) দাখিলমাদ্রাসা ০৭টি (ঝ) এফতেদায়ী মাদ্রাসা ১০টি (ঞ) বিএম কলেজ ০৩টি(ট) কৃষিকলেজ ০১টি (ঠ) কেজি স্কুল ০৮টি (ড) সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ৯২টি (ঢ) রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয় ৪৪টি(ণ) কমিউনিটি স্কুল ০১টি (ত) ব্র্যাক স্কুল ৩৮টি ।

 

·ভূমি বিষয়ক তথ্যাদিক)মোট হোল্ডিং ২৫,৬৫০ খ) মোট কৃষি খাস জমি৮৭৪.৭৯ একর; বন্দোবস্তযোগ্য মোট কৃষি খাস জমির পরিমান ৭৬২.৭৫একর, বন্দোবসত্মকৃত কৃষি খাস জমিরপরিমান ৪৯৪.০০ একর, বন্দোবসত্ম যোগ্য কৃষি খাস জমিরপরিমান ২৬৮.৭৫ একর, মামলাভূক্ত কৃষি খাস জমির পরিমান ১১২.০৪ একর।

 

·গ্রোথ সেন্টারঃ০৫ টি।

 

·হাট/বাজারঃ৩১ টি।

 

·মোট জলমহালঃ ২০ টি। ক) ২০ একরের উর্দ্ধে ০৯টি খ) ২০ একরের নিম্নে ১১ টি।

 

·আশ্রয়ন প্রজেষ্টঃ ২টি (পুনর্বাসিত পরিবার ১২০)।

 

·আদর্শ গ্রামঃ ০৫টি (পুনর্বাসিত পরিবার ১৪০)।

 

·স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্যাবলী ঃ-

 

·সরকারী হাসপাতালঃ০১টি।

 

·উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র ঃ০৩টি, পরিবার কল্যাকেন্দ্র ১০টি।

 

·টিউব ওয়েলের সংখ্যা ঃ ২৮,০৭৮ টি।

 

·স্বাস্থ্য সম্মত পায়খানারসংখ্যা ঃ৪২,৬৯১ ; স্যানিটেশন কভারেজ ৯৯.৫%।

 

·বিদ্যুৎ বিষয়ক তথ্যাদি ঃ(ক) মোটগ্রামের সংখ্যা ২০৫টি (খ) বিদ্যুতায়নকৃত গ্রাম ১৫৮ টি

 

(গ)বিদ্যুতায়নকৃত ইউনিয়ন ১০টি।

 

·মোট ব্যাংকঃ০৫ টি, শাখা ০৯ টি।

 

·হস্তচালিত তাঁতঃ ৪৩৯৩ টি।

 

·কুটির শিল্প ঃ৩২০ টি।

 

·বীজ ভান্ডারঃ০৯ টি ।

 

·মসজিদ ঃ ৩০৪ টি।

 

·কবরসহানঃ৯১ টি।

 

·ঈদগাহ্ঃ১৪৭ টি।

 

·মন্দিরঃ৫৮ টি।

 

·কর্মরত এনজিও সংখ্যাঃ১৫ টি।

 

·মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যাঃ৬২টি।

 

·জন্ম নিবন্ধন ঃমোট লক্ষমাত্রা ২,৮৫,০৩৭ জন।নিবন্ধিত সংখ্যা ২,৬২,৩২৪ জন,

 

অগ্রগতির হার ৯২.০৩%।

 

 খাদ্য বিষয়ক তথ্যাদি

বিবরণ

উৎপাদনের লক্ষমাত্রা

অর্জন

ধান

,৮০,০০০মেঃ টন

,৮৬,৯৭০মেঃ টন

চাল

,০০,০০০মেঃ টন

,৯৯.৪৯৫মেঃ টন

গম

,৮১,০০০মেঃ টন

,৮০,৯৬৫,মেঃটন

 

নির্বাচনী এলাকাঃ৬৯,পাবনা-২ ( সুজানগর ও বেড়া আংশিক)

উপজেলা পোষ্ট অফিস ঃ০১টি, সাব-পোষ্ট অফিস ০২টি, ব্র্যাক পোষ্ট অফিস ১৮টি

প্রধান প্রধান নদ-নদী ও খাল বিলঃপদ্মা ও আত্রাই নদী এবং গাজনা ও গন্ডহস্তি বিল। বিল- ১৬ টি,

পুকুর - ১৮৯৮ টি

 

যোগাযোগ ব্যবস্থাঃ ঢাকা হতে পরিবহন ব্যবস্থাঃ পরিবহনের নাম- পাবনা এক্সপ্রেস,

মোবাঃ ০১৭১১-০২৪০৮৮, গাড়ী ছাড়ার স্থানঃ টেকনিক্যাল মোড়, মিরপুর, ঢাকা।

পরিবহনের নাম- শ্যামলী পরিবহন, মোবাঃ ০১৭২৪-৪৮৩০৩৪,

গাড়ী ছাড়ার স্থানঃ টেকনিক্যাল মোড়, মিরপুর, ঢাকা।

উপজেলা পটভূমি ও নামকরণ

সুজানগর পাবনা জেলার একটি ঐতিহ্যবাহীউপজেলা। পদ্মা নদীর তীরবর্তী এই উপজেলাটি জেলা শহর হতে সড়ক পথে ২০ কি: মি:পূর্বে অবস্থিত। প্রায় ৩৩৪.৩৪ বর্গ কি: মি: আয়তন বিশিষ্ট এই উপজেলারপূর্বে বেড়া উপজেলা, পশ্চিমে পাবনা সদর উপজেলা, উত্তরে সাঁথিয়া উপজেলা এবংদক্ষিণে প্রায় ৪০ কি: মি: দীর্ঘ সুবিস্তৃত পদ্মা নদী। প্রায় ২,৫০,০০০জনসংখ্যা অধ্যুষিত এই উপজেলা কৃষি সম্পদে সমৃদ্ধ। কৃষিজ পন্যের মধ্যেপেঁয়াজ, পাট এবং ধান উৎপাদনে এই উপজেলা সুবিখ্যাত। পাবনা তথা বাংলাদেশেরবিখ্যাত গাজনার বিল এই উপজেলাতে অবস্থিত। প্রায় ৫,৫০০ হেক্টর আয়তন বিশিষ্টএই বিলটি বর্ষাকালে পদ্মা নদীর পানি বিধৌত হয়ে মৎস্য সম্পদের এক বিশালভান্ডারে পরিণত হয়। বিল গাজনা হলো এ উপজেলার মানুষের জীবনযাত্রা নির্বাহেরমূলকেন্দ্র।

সুজানগরের আদি নাম গোবিন্দগঞ্জ। মুগল সম্রাট শাহ্জাহানের রাজত্বকালের শেষভাগে তার পুত্রদের মধ্যে রাজ সিংহাসনের দখল নিয়ে যে বিরোধেরসূত্রপাত হয় তার ধারাবাহিকতায় যুবরাজ শাহ সুজা আরাকানে পালিয়ে যান। তিনিআরাকান গমনকালে সুজানগরে ৩ রাত অবসহান করেন। যুবরাজ শাহ সুজার এই অবসহানকেচিরস্মরনীয় করে রাখার জন্য এতদ অঞ্চলের মানুষ এ জনপদের নামকরণ করেনসুজানগর।

দর্শনীয় স্থান

গজনার বিল, দুলাই আজিম চৌধুরীর জমিদার বাড়ী, তাঁতিবন্দ জমিদার বাড়ী, সাতবাড়ীয়াও রায়পুর পদ্মার পাড়, নাজিরগঞ্জফেরী ঘাট, চর দুলাই বট তলা ও সাগরকান্দী শাহ সুফি হযরত শাহ মাহতাব উদ্দিনের মাজার শরিফ।

গাজনার বিল

সুজানগর উপজলার সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও দর্শনীয় স্থান হলো বিল গাজনা। এ বিলটিসুজানগর উপজেলার মাঝখানে অবস্থিত। বিলের চার ধারে সকল বসতি অবস্থিত। এএলাকার অর্থনীতি নিয়ন্ত্রিত হয় এই গাজনার বিলের মাধ্যমে। বিলগাজনাটি ছোট-বড়১৬টি বিলের সমন্বয়ে গঠিত।

এই বিলের আয়তন ০৭ একর। বিলটিবাদাই স্লুইজ গেটের মাধ্যমে পদ্মা নদীর সাথে সংযুক্ত রয়েছে। বিলটিবর্ষাকালে অপরুপ সৌন্দর্য ধারন করে। বর্ষা কালে বহু দর্শক বিলটির সৌন্দর্যউপভোগের জন্য এ স্থানে আগমন করেন। বিলে প্রচুর দেশীয় মাছ পাওয়া যায়। শুস্কমৌসুমে বিলটিশুকিয়ে যায়। এ সময় এ বিলে ইরি ধান ও প্রচুর পেঁয়াজের চাষ হয়। এ বিলেরখালগুলি খনন করলে সারা বছর পানি ও মা মাছ থাকবে। এতে মাছের উৎপাদন অনেক গুনবেড়ে যাবে। সুজানগরের ১০টি ইউনিয়নই এ বিলের সহিত সংযুক্ত।

নাজিরগঞ্জ ফেরীঘাট

আন্তঃবিভাগ পদ্মা নদীর এক পার্শ্বে নাজিরগজ্ঞফেরীঘাট ও অপর পার্শ্বে রাজবাড়ী জেলার ধাওয়া পাড়া ফেরীঘাট। এই ফেরী ঘাটেরমাধ্যমে উত্তর বঙ্গ ও দক্ষিন বঙ্গের যানবাহন ও লোক পারাপার হয়ে থাকে।নাজিরগঞ্জ ফেরীঘাট এলাকায় পদ্মা নদীর সোন্দর্য উপভোগ করার মত।

দুলাই আজিম চৌধুরীর জমিদার বাড়ী

প্রায় আড়াইশোবছর আগে নির্মিত জমিদার বাড়ীটির ধ্বংসাবশেষ কালের সাক্ষী হিসাবেদন্ডায়মান। এই জমিদার বাড়ীতে একটি ধ্বংস প্রাপ্ত মট, একটি ধ্বংস প্রায়অট্টালিকা, ০৫টি পুকুর জরাজীর্ন অবস্থায় রয়েছে। আনুমানিক আড়াইশো বছর আগেউক্ত দুলাই গ্রামের এক সম্ভ্রামত্ম মুসলিম পরিবারে আজিম চৌধুরীর জন্ম হয়।তার পিতা রহিম উদ্দিন চৌধুরীতৎকালীন নাটোরে অবস্থিত রাজশাহী কালেক্টরেট অফিসের পেশকার ছিলেন। উক্তরহিম উদ্দিন চৌধুরী বংশের প্রতিষ্ঠাতা হলেও প্রকৃত পক্ষে তার পুত্র আজিমচৌধুরীর সময়েই দুলাই সহ আশ পাশের এলাকায় তাদের জমিদারীর চরম উৎকর্ষসাধিত হয়।

এই খ্যাতিমান পুরুষ তার সুদুর প্রসারী জ্ঞান এবং প্রজ্ঞাদ্বারা তৎকালে ঐ এলাকায় জমিদারিত্ব করার পাশাপাশি দুলাইতে ২/৩ টি নীল কুঠিস্থাপন করেন। ১২০ বিঘা জমির তিন ভাগের এক ভাগ জুড়ে নির্মাণ করেছিলেনঅত্যাধুনিক ডিজাইনের দ্বিতল বহু দুয়ারি এবং বহু কক্ষের প্রাসাদতুল্য এইঅট্টালিকা। ১১ টি নিরাপত্তা গেট বেষ্টিত এ অট্টালিকার মূল গেটে দন্ডায়মানথাকত বিশাল আকৃতির দুটি হাতি। হাতি দুটিকে জমিদার বাড়ীর নিরাপত্তা প্রহরীরকাজে ব্যবহার করা ছাড়াও আজিম চৌধুরীর ভ্রমণ বাহন হিসাবে ব্যবহার করা হত।মনোলভা সৌন্দর্য মোহিত বিলাসবহুল এ অট্টালিকারচারদিকে পরিবেষ্টিত ৬০ বিঘার একটি দর্শনীয় দীঘি।নিরাপত্তা বিধানে হাতি ছাড়াও ছিল দুটি আধুনিক স্বয়ংক্রিয় কামান। বাড়ীরঅভ্যন্তরে একটি মসজিদ, জমিদার দরবারে কর্মরতকর্মকর্তা কর্মচারীদের গোসলেরজন্য একটি বিশাল পুকুর এবং জমিদার পরিবারের বিবিদের গোসলের জন্য অন্দরমহলের ভিতরে খনন করা হয়েছিল আরোও একটি দর্শনীয় পুকুর। তৃতীয় প্রজন্মেরবংশধর বর্তমানে উক্ত জমিদার বাড়ীটি দেখাশুনা করছেন।

তাঁতিবন্দ বিজয় গোবিন্দ চৌধুরী জমিদার বাড়ী

আনুমানিক২০০ বছর আগে পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার তাঁতিবন্দ গ্রামের এক সম্ভ্রান্তহিন্দু পরিবারে জন্ম হয় জমিদার বিজয় গোবিন্দ চৌধুরীর। তাঁর বাবার নাম গুরুগোবিন্দ চৌধুরী। তৎকালীন নাটোর কালেক্টরেটের সেরেসতাদারউপেন্দ্র নারায়ন চৌধুরী তাঁতিবন্দ জমিদার বংশের প্রতিষ্ঠাতা হলেও তদ্বংশীয়খ্যাতিমান পুরুষ বিজয় গোবিন্দ চৌধুরীর শাসনামলেই তাঁতিবন্দসহ আশপাশেরএলাকায় তাদের জমিদারিত্বের প্রভাব প্রতিপত্তি ছড়িয়ে পরে। তার জমিদারী আমলেপ্রজাগণের বিনোদনের জন্য জাঁকজমকপূর্ণ পূজা পার্বনের ব্যবস্থা করারপাশাপাশি হসতী নাচের ব্যবস্থা করা হত। এ জন্য তিনি একাধিক হাতি পালন করতেন।তবে ব্যয় বহুল হাতি পালনের জন্য প্রজা বর্গের নিকট হতে হসিত পোষনার্থীহাতি খরচ নামে বাজে জমা আদায় করা হতো।

তিনি তারজমিদারিত্বেরকার্যকালে শতাধিক বিঘা জমির উপর জমিদার বাড়ী নির্মান করেছিলেন। বিশালমনোমুগ্ধকর এ বাড়ীর এক তৃতীয়াংশ জুড়ে নির্মান করা হয়েছিল অত্যাধুনিকডিজাইনের একাধিক অট্টালিকা, পূজা মন্দির, দিঘী এবং দুটি সুউচচ দর্শণীয় মঠ।জমিদার বিজয় গোবিন্দ চৌধুরীর বিভিন্ন ঐতিহাসিক কৃতির মধ্যে মঠ দুটিই ছিলস্মৃতিচারীত করার মত। পাবনা জেলার প্রতিটি মানুষের কাছে মঠ দুটি ছিল বিজয়বাবুর মঠ নামে পরিচিত। অত্যন্ত কারুকার্যখচিত ব্যয় বহুল এই মঠ দুটি দেখতে ঐসময় বিভিন্ন জেলার লোক বিজয় গোবিন্দ চৌধুরীর জমিদার বাড়ীতে আসতেন। যুগেরবিবর্তনে এবং সময়ের পালাএুমে স্বর্গীয় জমিদার বিজয় গোবিন্দ চৌধুরীর সকলস্থাপনা ধ্বংস হতে চললেও আজও পাবনা এবং সুজানগর বাসীর মনে প্রানে চিরস্মরণীয় হয়ে আছে বিজয় গোবিন্দ চৌধুরীর কর্মযগ্যের ইতিহাস।

 

 

 

 

এক নজরে ভাঙ্গুরাউপজেলা ও তার ইউনিয়নসমুহ

এক নজরে ভাংগুড়া উপজেলাঃ

Ÿউপজেলারনাম

ভাংগুড়া ।

Ÿআয়তন

১৩৬.০০বর্গ কিঃমিঃ।

 

 

Ÿজনসংখ্যা

১,১৬,৬৭৪ জন (প্রায়)।

 

তন্মধ্যে পুরুষ-৫০.৩১% ও মহিলা-৫৯-৬৯%।

 

মুসলমান-৯৪%, হিন্দু-৫.৮% অন্যান্য-.২০%।

Ÿঘনত্ব

প্রতি বর্গ কিঃমিঃ-এ ৭৩১জন(প্রায়)।

Ÿনির্বাচনী এলাকা

৭০, পাবনা-৩।

Ÿইউনিয়ন

০৫টি।

 

 

Ÿখানা

২০৫৭৬ টি।

 

 

Ÿমৌজা

৭০টি।

 

 

Ÿসরকারীহাসপাতালঃ

০১ টি (৩১শয্যা বিশিষ্ঠ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স)।

 

 

Ÿস্বাস্থ্য কেন্দ্র/ক্লিনিক

স্বাস্থ্য কেন্দ্র- ০৯টি। বে-সরকারীক্লিনিক-১০টি।

 

 

Ÿপোস্ট অফিস

পোস্ট অফিস-০১টি। ব্রাঞ্চ অফিস-০৮টি। পোস্ট কোডনং-৬৬৪০।

Ÿনদনদী

বড়াল ও গুমানীনদী ভাংগুড়া উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত। বড়াল নদীযমুনা নদী থেকে উৎপত্তি হয়ে গুমানী নদীতে মিলিতহয়েছে। গুমানী নদীযমুনা নদী থেকে উৎপত্তি হয়ে পার্শ্ববর্তীচাটমোহার উপজেলার বড়াল নদীরসাথে মিলিতহয়েছে। নদী পথে শ্যালো নৌকা ও ট্রলার দ্বারা মানুষ ওমালামাল পরিবহন করা হয়। অত্র উপজেলায় প্রায়১৫ নটিক্যাল মাইলনদীপথ আছে।

Ÿব্যাংক

সোনালী ব্যাংক-০১, অগ্রণী ব্যাংক-০১, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক-০২,গ্রামীণব্যাংক-০১।

 Ÿহাট/বাজার ঃ

ক্রঃনং

হাট/বাজারেরনাম

অবস্থান/ইউনিয়ন

হাটবার

০১.

ভাংগুড়া হাট

পৌরসভা

শুক্রবার ও মঙ্গলবার

০২.

শরৎনগর হাট

পৌরসভা

শনিবার ও বুধবার

০৩.

ভেড়ামারা হাট

পার-ভাংগুড়া

বৃহস্পতিবার ও রবিবার

০৪.

অষ্টমনিষা হাট

অষ্টমনিষা

প্রতিদিন বাজার

০৫.

চন্ডিপুর হাট

খানমরিচ

রবিবার ও বুধবার

০৬.

ময়দানদিঘিহাট

খানমরিচ

শনিবার ও মঙ্গলবার

০৭.

পুঁইবিল হাট

ভাংগুড়া

রবিবার ও বৃহস্পতিবার

০৮.

দহপাড়া হাট

ভাংগুড়া

বুধবার ও শনিবার

০৯.

পুকুরপাড় হাট

খানমরিচ

প্রতিদিন বাজার

উপজেলার পটভূমিঃ

ভাংগুড়া চলনবিলবিধৌত একটি জনপদ। ভাংগুড়া উপজেলা ০৫টি ইউনিয়ন (ভাংগুড়া, পার-ভাংগুড়া, অষ্টমনিষা, খানমরিচ, দিলপাশার) ও ০১টি পৌরসভা (ভাংগুড়া পৌরসভা) নিয়ে গঠিত।মূলতঃ গুমানী এবং বড়াল নদী বেষ্টিত এই ভূ-ভাগ চলনবিল সন্নিহিত হওয়ায় প্লাবনসমভূমি দ্বারা গঠিত। প্রাচীন ইতিহাস সম্পর্কে তেমন স্বাক্ষ্য পাওয়া যায়না। তবে এর বুক চিরে খুলনা-ঢাকা, রাজশাহী-ঢাকা, দিনাজপুর-ঢাকা রেল যোগাযোগবৃটিশদের দ্বারা তৈরী হওয়ায় তৎকালীন সময়ে ভাংগুড়ার সাথে কলিকাতার যোগাযোগছিল। ভাংগুড়া নামটা নিয়ে কিংবদন্তী প্রচলিত আছে। অনেকে বলেন- বড়াল এবংগুমানী নদীর ভাঙ্গন কবলিত এলাকা হওয়ায় এর প্রাচীন নাম ছিল ভাংগুরিয়া। এভাবেভাংগুরিয়া থেকে ভাংগুড়া নামের উদ্ভব হয়। বর্তমানে গুমানী ও বড়ালেরসংযোগকারী একটি খালের স্রোতরেখা বিদ্যমান আছে। যার ফলে এই জনশ্রুতির পক্ষেপ্রমাণ পাওয়া যায়। অনেকে বলে থাকেন নেশা জাতীয় ভাং গাছের গুড়া এখানে প্রচুরপরিমাণ পাওয়া যেত সেজন্য এর নাম ভাংগুড়া হয়। এমতের পক্ষে তেমন জোড়ালোপ্রমাণ পাওয়া যায় না। চাটমোহর ও ফরিদপুর থানার কিছু অংশ নিয়ে ১৯৮১ সালেভাংগুড়া উপজেলা গঠিত হয়। এর আগেভাংগুড়া ফরিদপুর থানার একটি ইউনিয়ন ছিল। ভাংগুড়া আপগ্রেড থানা হয় ১৯৮২ সালে। ভাংগুড়াগ্রামের নামানুসারে ভাংগুড়া উপজেলার নাম করণ করা হয়েছে।

ভাঙ্গুরা উপজেলার মানচিত্র

ভাংগুড়াউপজেলার উত্তরে- তাড়াশ, দক্ষিণে-ফরিদপুর, পশ্চিমে- চাটমোহর ও পূর্বে-উল্লাপাড়া উপজেলা অবস্থিত। ভাংগুড়া উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নটি চলন বিলেরমধ্যে অবস্থিত এবং ঐ এলাকার পুকুর খননের সময় কয়েক বছর আগেবিভিন্ন ধরনের পৌরানিক দেবদেবীর মূর্তি পাওয়া গেছে। যা জাতীয় জাদুঘরেসংরক্ষিত আছে। ফলে এই ভূমি উন্নত সভ্যতার সংস্পর্শে থাকা স্বাভাবিক।উত্তরাঞ্চলের পুন্ড্রনগর সভ্যতার সাথে তার যোগাযোগ থাকতে পারে বলে মনে করাহয়। বর্তমানে ভাংগুড়া সড়ক,রেল এবং নদীপথেঢাকা-খুলনা-রাজশাহী-নাটোর-দিনাপজুর-রংপুর-বগুড়ার সাথে যুক্ত। এ কারণেবাংলাদেশের সমগ্র অঞ্চলের সাথেভাংগুড়ার উন্নত যোগাযোগ থাকায় এ উপজেলায় উন্নয়নের অমিত সম্ভাবনা লুকিয়েআছে। পরিকল্পিত নগরায়ন ভাংগুড়া শহরকে এ অঞ্চলের একটি উন্নত মানব বসতিকেন্দ্র হিসাবে গড়ে তুলতে পারে।

উল্লেখযোগ্য স্থান বা স্থাপনাঃ

উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, অডিটোরিয়াম-কাম-কমিউনিটি সেন্টার, বড়ালব্রীজ রেলওয়ে স্টেশনবড়ালনদী, বড়াল ব্রীজ, বৃদ্ধমরিচ শাহী মসজিদ, সারুটিয়া কমিউনিটি সেন্টার-কাম-পাবলিক লাইব্রেরী

 

তথ্যের উৎসঃ Bangladesh Population census